ডেস্ক রিপোর্ট: একদিনের হারতাল-অবরোধে সার্বিক অর্থনীতিতে ১,৬০০ কোটি এবং বিমা কোম্পানিগুলোর ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)।
সোমবার বিকেলে বিআইএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি শেখ কবির হোসেন।
এতে জানানো হয়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ গাড়িগুলোর মধ্যে কতটি বিমা করা আছে তার সঠিক তথ্য বিআইএর কাছে নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ কবির হোসেন বলেন, হরতাল-অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির বিমা দাবি পেতে হলে অবশ্য এর জন্য কাভারেজ নিতে হবে। এ জন্য আলাদা প্রিমিয়ামও পরিশোধ করতে হবে। হরতাল-অবোরোধের বিমা কাভারেজ নেওয়া নেই এমন কোনো গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিমা দাবি পাবে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বিআইএ সভাপতি বলেন, কত সংখ্যক গাড়ির হরতাল কাভারেজ নেওয়া আছে সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। ভবিষ্যতে আমরা এ তথ্য সংগ্রহ করবো। তবে ২০১৩-১৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ১ হাজার কোটি টাকার বিমা দাবি এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতিতে হরতাল-অবরোধের প্রভাবের বিষয়ে বলা হয়, একদিনের হরতাল-অবরোধে সার্বিক অর্থনীতির ক্ষতি হয় ১,৬০০ কোটি টাকা। বছরে এ ক্ষতির পরিমাণ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬.৫ শতাংশের সমান।
বিআইএ জানায়, একদিনের হরতাল-অবরোধে পোশাক খাতে ক্ষতি হয় ৩৬০ কোটি টাকা। বছরে এর পরিমাণ ১৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
সরকারীরি রাজস্ব খাতে একদিনের ক্ষতি ২৫০ কোটি টাকা, বছরে যার পরিমাণ ১০ হাজার কোটি। শিক্ষাখাতে একদিনের ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা। আর বছরে এর পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকা।
হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে পাইকারি মার্কেট, শপিংমল ও অন্যান্য শপ। একদিনের হরতাল-অবরোধে এ খাতে ক্ষতি হয় ৬০০ কোটি টাকা, বছরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪ হাজার কোটি টাকা।
আর্থিক ও ভ্রমণ খাতে একদিনের হরতাল-অবরোধে ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা করে, বছরে এর পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকা। যাতায়াত খাতে এক দিনে ক্ষতি ৬০ কোটি টাকা এবং বছরে ২,৪০০ কোটি টাকা। উৎপাদন খাতে একদিনে ক্ষতি ১০০ কোটি এবং বছরে ৪,০০০ কোটি টাকা। আর অন্যান্য খাতে একদিনের ক্ষতি ৬৫ কোটি এবং বছরে ২,৬০০ কোটি টাকা।
হরতাল-অবরোধে বিমা কোম্পানির ক্ষতির বিষয়ে বিআইএর সহ-সভাপতি আহছানুল ইসলাম টিটু বলেন, হরতাল-অবরোধ হলে বিমা কোম্পানির বিনিয়োগ, আমদানি, রপ্তানি, প্রিমিয়াম আয়, বিমা দাবি পরিশোধ সব দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ হিসাবেই একদিনে বিমা কোম্পানির ক্ষতি হয় ১৫ কোটি টাকা।
হরতাল-অবরোধ বন্ধে এফবিসিসিআইর আইন ক্ষতিয়ে দেখার বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ কবির বলেন, আইনি সুযোগ থাকলে আমরাও এফবিসিসিআই’র সঙ্গে আছি। তবে যা কিছু করতে হয়, আইনের ভিতরে থেকে করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নীটল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান কে এম মনিরুল হক ও কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ভাইস-চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন পাভেল।