আমির হোসেন আমু
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া জনগণের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের পুড়িয়ে মারছেন।
তিনি আজ সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে আরও বলেন, ‘গতবছরের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে ঈদের পর ঈদের পর বলে ১ বছর পার করে দিয়েছেন। মনে করেছিলেন ৫ জানুয়ারি কালো দিবস ঘোষণা করে সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলনের ডাক দিবেন। কিন্তু জনগণ তার ডাকে সাড়া না দেয়ায় তিনি তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারছেন।’
মন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া হুকুম দিয়ে যে মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। তার প্রমাণ হল এতগুলো মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু তিনি একটি মৃত্যুর জন্যই সমবেদনা জানাননি। কারণ তিনি তাদের মারছেন বলেই তাদের মৃত্যুতে সমবেদনা জানাতে পারেনি।
আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নাকি ইসলামপন্থী। অথচ বিশ্ব ইজতেমা ও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’র সময়ও তিনি অবরোধ চালিয়ে গেছেন।
তোফায়েল আহমেদ
আলোচনায় অংশ নিয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ নাশকতামূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করে যদি কেউ দাবি আদায় করতে পারতো তাহলে পৃথিবীতে রাজনীতি বলে কিছু থাকতো না। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এখন যা চলছে তা রাজনীতি নয়, সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও নাশকতামূলক কাজ।
বেগম খালেদা জিয়া নাশকতা সম্পর্কে মিথ্যাচার করে সরকারের ওপর দায় চাপাতে চাইলেও এ পর্যন্ত যারা ধরা পড়েছে তাদের বেশির ভাগই ছাত্রদল, যুবদল ও শিবিরের নেতা। এ প্রসঙ্গে তিনি লালবাগের ছাত্রদল নেতা বাপ্পীর বোমা বিস্ফোরণে নিহত হওয়া ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদল নেতার আটকের কথা উল্লেখ করেন।
তোফায়েল আহমেদ বোমা হামলায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী সাজিদুর রহমান অভি’র মায়ের আহাজারির কথা সংসদে তুলে ধরেন।
সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, আন্দোলনের নামে দেশ জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হতে পারে না। বেগম খালেদা জিয়া সন্ত্রাস করে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান। এটা দেশের মানুষ মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন বিবেক বর্জিত মহিলা। কোন বিবেকবান মানুষ শিশু, নারী, নিরীহ মানুষকে এভাবে পুড়িয়ে মারতে পারে না। বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের নামে যে জঙ্গি তৎপরতা তা আল-কায়দা ও তালেবানদের সাথে তুলনা করা যায়। আল-কায়দা, তালেবান আর খালেদা জিয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আল-কায়দার সাথে যেমন আলোচনা হতে পারে না। তেমনি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে আলোচনা হতে পারে না।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আইনের উর্ধ্বে নয়। তিনি যে ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছেন অবশ্যই তার বিচার পাওয়া উচিত। আইন-শৃংখলা বাহিনী এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে সরকারি দলের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, নির্মম, নিষ্ঠুরভাবে যারা মায়ের পেটের ব্রুন হত্যা করে তারা মানবতার শত্রু। এদের সাথে কোন ধরনের সংলাপ বা আলোচনা হতে পারে না।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও গণতন্ত্র এক সাথে চলতে পারে না। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও নাশকতার বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডেইলি স্টারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন ‘বাংলাদেশের মোল্লা ওমর। কুইন অব টেররিস্ট।’
এছাড়া সরকারি দলের সদস্য আব্দুল মতিন খসরু, জাহাঙ্গীর কবির নানক, চিফ হুইফ আ স ম ফিরোজ, জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, স্বতন্ত্র সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম আলোচনায় অংশ নেন।