খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে শোক ও সমবেদনা জানাতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়াকে ‘অভদ্রজনোচিত, শিষ্টাচার বর্হ্ভূত ও অমানবিক’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে যাওয়া ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে খালেদা জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি চেয়াপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ভেতর থেকে বন্ধ ফটক না খোলায় বাইরে থেকেই ফিরে আসতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে।
প্রধানমন্ত্রী ফিরে যাবার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ইকবাল সোবহান সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবে, একজন দরদী মানুষ হিসেবে, একজন নেত্রী হিসেবে আরেকজন ছেলেহারা মাকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় ফিরে গেছেন। আপনারা দেখেছেন, দরজাটি খোলা হয়নি। এটা অভদ্রজনোচিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়, অমানবিকও।”
প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা আরও বলেন, “বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো নেতা এসে যদি প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বলতেন, তাহলেও শিষ্টাচার দেখানো হত, সেটাও তারা দেখাননি।”প্রধানমন্ত্রী আসার খবর কি আগে জানানো হয়েছিল- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “আপনার বাড়ির সামনে প্রধানমন্ত্রী যদি আসেন, খবর দিয়ে এসেছেন কি আসেননি, সেটা বড় নয়। বড় কথা হল, প্রধানমন্ত্রী এসেছেন। মানবিক বিষয় চিন্তা করেই প্রধানমন্ত্রী সকল প্রটোকল ভেঙে তাকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিলেন, উনি গাড়ি থেকে নেমেছিলেনও, কিন্তু উনাকে ফিরে যেতে হল।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের মূল ফটকের ভেতরে দুটি গাড়ি আড়াআড়ি রাখা ছিল। আগে থেকে রাখা ওই গাড়িগুলো প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার পর খবর শোনার পরও সরানো হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী ফিরে যাবার পর রাত ৯টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এডভোকেট শিমুল বিশ্বাস বলেন, আজ রাত ৭টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখরের সঙ্গে তার কথা হয়। ওই সময় তিনি তাকে (এপিএস) জানিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া অচেতন। তাঁকে (খালেদা জিয়া) ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু এরপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ করে চলে এসেছেন।
যদিও প্রধানমন্ত্রী আসাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা থেকেই গুলশান কার্যালয়ের সামনে ও এর আশপাশে এসএসএফ, পিজিআর, পুলিশ, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা ব্যপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করে।
ইতিমধ্যে গনমাধ্যমের সহায়তায় সন্ধ্যাতেই দেশবাসী অবগত হয়ে যায়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাচ্ছেন গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়াকে শোক ও সমবেদনা জানাতে।’
উল্লেখ্য, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউনিভার্সিটি মালায়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।
স্ত্রী সৈয়দ শামিলা রহমান সিঁথি, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে কুয়ালালামপুরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন কোকো।