খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে গিয়েও প্রধানমন্ত্রীর ফিরে আসা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করলেন, “নিজ কার্যালয়ের দরজা বন্ধ রেখে খালেদা জিয়া সংলাপের পথও রুদ্ধ করে দিলেন।”
রবিবার রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে ছাত্রলীগের শিক্ষা উপকরণ বিরতণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতির সামনে কাল যে আশার সঞ্চার হয়েছিল সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “গতকাল (শনিবার) একটি সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল সংলাপ ও সমঝোতার। কিন্তু নিজের কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে খালেদা জিয়া সমঝোতাকে অবরুদ্ধ করে ফেললেন। সংলাপকেও অসম্ভব করে ফেললেন।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন যে তিনি দেশের শান্তি চান। শেখ হাসিনা গতকাল একজন মায়ের কাছে সহানুভূতি জানাতে গিয়েছিলেন। কারণ তিনি (শেখ হাসিনা) একজন মা, মায়ের অনুভূতি তার আছে। কিন্তু তিনি অবাঞ্ছিত হয়ে খালেদা জিয়ার গেট থেকে ফিরে এলেন।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “শনিবার সন্ধ্যায় আমি গোপালগঞ্জ থেকে ফিরছিলাম। সে সময় ফেরির টিভি স্ক্রলে দেখানো হলো যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে যাবেন। ক্ষণিকের মধ্যে প্রত্যেকের মধ্যে ফিরে এলো স্বস্তির আমেজ। সেই স্বস্তি যেন বাংলাদেশের প্রতিধ্বনি।”
১৫ আগস্টে কেক কাটা ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার খারাপ অনুভূতি নিয়েও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ শনিবার এগিয়ে গিয়েছিল বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “৫ জানুয়ারির আগে প্রধানমন্ত্রী যখন বিএনপি নেত্রীকে গণভবনে দাওয়াত দিয়েছিলেন সে সময় যদি তিনি আসতেন তবে সংলাপের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারত। কিন্তু সেই সুযোগও তিনি অহবেলা করেছিলেন।”
বোমা মেরে এ দেশের গণতন্ত্রকে অগ্নিদগ্ধ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আজকে শিশু ও নারীরা টার্গেট হচ্ছে। রাজনীতির মাধ্যমেই এ নৃশংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।”
“সেদিন নেত্রী আমাদের খালেদা জিয়াকে রিসিভ করে আনতে বলেছিলেন”
একই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা যাওয়ার পরও দেশের মানুষ মনে করেছিল এবার সুমতি হবে। কিন্তু তিনি অবরোধ তুলে নেননি। ছেলে যাক কিন্তু তার ক্ষমতার সিংহাসন চাই।”
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “গতকাল মানুষ টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে রয়েছিল কোনো সুখবরের আশায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে গেলেন তখন গেট খোলা না দেখে তিনি মুখ মলিন করে ফিরে আসলেন।”
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কিন্তু শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া যখন মারা গেলেন তখন নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাদের খালেদা জিয়াকে রিসিভ করে আনতে বলেছিলেন। সে দিন নেত্রীসহ আমরা তাকে রিসিভ করে এনেছিলাম।”
বিএনপিকে উদ্দেশ করে নানক বলেন, “ওরা ভদ্রতা জানে না, রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানে না। জানে শুধু মানুষ হত্যা করতে। এ হত্যার প্রতিদান বাংলার মানুষ দেবে।”
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু হায়দার আহমেদ নাসের, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী মিরাজুল ইসলাম ডলার।