‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যথোপযুক্ত সৌজন্য না দেখানো সঠিক হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় থেকে শনিবার রাত ৮টার পর বের হয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানাতে শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় গুলশান কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গেটে তালা থাকায় গাড়ী থেকে নেমেও ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। কার্যালয়ের সামনে সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে গণভবনে ফিরে যান আওয়ামীলীগ সভানেত্রী।
এসময় খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করা ব্যারিস্টার মওদুদ এ প্রসঙ্গে গতকাল সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেও আজ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “দেশনেত্রী ব্যাপারটি অজ্ঞাত ছিলেন। তিনি সে সময় প্রায় অজ্ঞানের মতো ছিলেন। আমরা কেউ তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পায়নি। দরজা বন্ধ থাকায় প্রধানমন্ত্রী আসার খবরও তাকে জানানো সম্ভব হয়নি।”
প্রধান ফটক না খোলা প্রসঙ্গে বিএনপির এই সিনিয়ার নেতা বলেন, “শনিবার গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত নেতৃবৃন্দসহ আমরা কেউই জানতাম না মূল গেটে তালা লাগানো ছিল। সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মতামতের বাইরে মূল গেটে আগে থেকেই তালা ছিল। আমাদের অনেকেরই তা জানা ছিল না।”
প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবন থেকে রওনা হওয়া মাত্রই খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, “পুত্রের মৃত্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসনের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা ভাল না থাকায় তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। এ মুহূর্তে তার সঙ্গে দেখা করা সম্ভব নয়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছি তিনি যেন এখন এখানে না আসেন।’
শিমুল বিশ্বাসের এমন প্রেস ব্রিফিংয়ের কয়েক মিনিট পরই প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা। এ সময় কার্যালয়ের সামনে প্রধানমন্ত্রী ও তার সঙ্গীরা দাঁড়িয়ে থাকলেও কার্যালয়ের ভেতর থেকে প্রধান ফটকটি বন্ধ করে রাখা হয়। তখন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কোনো নেতা কিংবা খালেদা জিয়ার পরিবারের কোনো সদস্যও প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাননি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী আবার গণভবনের ফিরে যান।
প্রধানমন্ত্রী ফিরে যাবার পর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে তার কার্যালয়ে সমবেদনা জানাতে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ৪৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
কোকোর মৃত্যুতে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। তবে আওয়ামীলীগ এঘটনাকে বলেছে ‘চরম অসৌজন্যমূলক, শিষ্টাচার বহির্ভূত, অপমানজনক ও ন্যক্কারজনক।’
খালেদা জিয়াকে সহানুভূতি জানাতে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসাটা ছিল নিছকই ছলনা আজ মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।