বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। কোকোর মৃত্যুর পর গুলশান কার্যালয়ে আসা রাজনৈতিক, সামাজিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা করতে না পারায় তিনি গভীরভাবে দুঃখও প্রকাশ করেন।
‘পরিস্থিতি বিবেচনায় সকলেই বিষয়টিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’ বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।
মুদ্রা পাচার মামলায় কারাদণ্ডের সাজা নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা আরাফাত রহমান কোকো গত ২৪ জানুয়ারি শনিবার মালয়েশিয়ায় হার্ট এ্যাটাকে মারা যান।
একই দিন রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসনকে সমবেদনা জানাতে গুলশান কার্যালয়ে আসেন। কিন্তু ‘বিএনপি চেয়ারপারসনকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে, এখন তিনি দেখা করতে পারবেন না’ এমন অজুহাত দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
২৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে আরাফাত রহমান কোকোর লাশ দেশে এনে গুলশান কার্যালয়ে মায়ের কাছে কিছুক্ষণ রাখার পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বাদ আসর জানাজা শেষে ওইদিনই বনানী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিবৃতিতে বলেন, “আমার এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর আকস্মিক অকাল মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই মা হিসেবে আমি গভীরভাবে শোকাহত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।”
তিনি বলেন, “অসুস্থ হয়ে প্রবাসে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থাতেও সে চরম প্রতিহিংসামূলক বৈরিতা থেকে নিষ্কৃতি পায়নি। ভাগ্যের এমনই নিষ্ঠুর পরিহাস যে, মা হিসেবে আমি প্রায় আট বছর ধরে অসুস্থ সন্তানটির মুখ দেখার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত ছিলাম। অবশেষে আমাকে সন্তানের লাশ গ্রহণ করতে হলো। সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের কাছে আমি এর বিচারের ভার অর্পণ করলাম।”
“শুধুমাত্র শহীদ জিয়া পরিবারের একজন সদস্য হবার কারণেই তাকে নানামুখী জুলুম-নির্যাতন, হেনস্থা-অপপ্রচারের শিকার হতে হয়েছে।” আরও বলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
বিবৃতিতে প্রবাস ও দেশে কোকোর জানাজায় অংশগ্রহনের জন্য খালেদা জিয়া সকল নেতা কর্মী সহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
সর্বস্তরের দেশবাসীর এই অংশগ্রহণ শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তি সঞ্চয়ে বেগম জিয়াকে সাহায্য করবে বলে জানান হয় বিবৃতিতে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “বিভিন্ন ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের নেতৃবৃন্দের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার এই দুঃখের সময়ে তারা শোকবার্তা পাঠিয়ে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন। আমি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা শোকবার্তা পাঠিয়ে এবং সশরীরে আমার কার্যালয়ে এসে সহানুভূতি জানিয়েছেন।”
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া আরও বলেন, “বিএনপি ও ২০ দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-জোটের নেতাকর্মী, পেশাজীবী, নাগরিক সমাজের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃকিত অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্ববর্গসহ নর-নারী, শ্রেণী-পেশা ও বয়স নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা আমার কার্যালয়ে এসে শোক প্রকাশ ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন।”