ভারতে একটি বিমানের ভেতর এক প্রৌঢ় যাত্রীর হাতে তার পাশে বসা তরুণী যৌন নিগ্রহের শিকার হওয়ার পর ওই ব্যক্তির মাফ চাওয়ার ছবি মোবাইল ক্যামেরায় তুলে নেন তরুণী নিজেই - যা এখন অনলাইনে হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ঘটনাটি ঘটে গত ২৭শে জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই থেকে ভুবনেশ্বরগামী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে। বিমানে ৬০ বছর বয়সী শিল্পপতি রবীন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালার আসন ছিল ঝাড়খন্ডের এক তরুণীর পাশেই।
বিমান যখন মাঝ-আকাশে, তখন ওই ব্যক্তি বার বার ইচ্ছে করে ওই তরুণীর শরীরে হাত দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এমন কী তিনি গোপনে তার শরীরের নানা অংশ খামচে ধরেন বলেও ওই তরুণী পরে অভিযোগ করেছেন।
কিন্তু ওই তরুণী এই যৌন নিগ্রহ নীরবে হজম করে যেতে রাজি হননি - একটা পর্যায়ে বিমানের ভেতরেই তিনি প্রতিবাদে ফেটে পড়েন, নিজের মোবাইল ফোনের ক্যামেরা অন করে তিনি ওই ব্যক্তির উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘একজন মেয়ে বলে আপনি যা খুশি করে যাবেন, যেখানে ইচ্ছে হাত দেবেন - আর ভেবেছেন আমরা চুপ করে থাকব?’
মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও-তে পরে দেখা গেছে, ওই ব্যক্তি ভয়ে প্রায় সিঁটিয়ে গিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন - আর খুব মিনমিন করে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলছেন। প্রতিবাদী তরুণী অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই বলেন ‘কীসের ক্ষমা’?
প্লেন বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর যাত্রীরা যখন লাগেজের জন্য অপেক্ষা করছেন, তখন ওই তরুণী আবার ওই ব্যক্তিকে চার্জ করেন - যার জবাবে তাঁকে বলতে শোনা যায় ‘সবারই ভুল হয়, আমারও একটা ‘বিরাট ভুল’ হয়ে গেছে’।
প্রৌঢ় ওই ব্যবসায়ী এ কথাও জানান যে তাঁর পরিবারে তাঁর নিজেরও একটি মেয়ে আছে। তরুণীটি তার জবাবে বলে, ‘ওই মেয়েটির কথা ভেবে সত্যিই আমার দু:খ হচ্ছে - যে আপনি ওর বাবা!’
মোট মিনিট-চারেকের এই দুটি ভিডিও ওই তরুণী পরে ফেসবুকে আপলোড করলে তা নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায় - মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লক্ষাধিক মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া বা ইউটিউবে ভিডিওগুলো দেখে ফেলেন।
পরে ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে ভুবনেশ্বরের পুলিশ রবীন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালাকে গ্রেফতারও করে - যদিও অতি অল্প সময় পরেই তিনি জামিন পেয়ে যান।
শহরের পুলিশ কমিশনার আর পি শর্মা জানান, ‘ওই ব্যক্তি বিমানের দুটো আসনের মধ্যেকার ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে নিজের যৌন তৃপ্তির জন্য তরুণীর শরীরের বিশেষ বিশেষ অংশ স্পর্শ করতে চেয়েছিলেন।’
তবে এটা জামিনযোগ্য অপরাধ বলেই পুলিশ অভিযুক্তকে বেশিক্ষণ নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারেনি। সূত্র-বিবিসি।