বাংলাদেশের সংসদে চলমান সহিংসতা বন্ধে ‘সেনা-বিহীন জরুরী অবস্থা’ জারির দাবি ওঠার একদিন পর আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা নাকচ করে দিয়ে সাফ জানিয়েছেন “ইমার্জেন্সি দেওয়ার মতো কোনো অবস্থা কেউ সৃষ্টি করতে পারেনি। জনগণের সমর্থন যেহেতু নাই, সেহেতু এরা হলো সন্ত্রাসী। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই সন্ত্রাসীদের আমরা মোকাবেলা করব।”
দশম সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে তিনি সরকারের এ সিধান্তের কথা সংসদকে জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সংবিধান সংশোধন করে ৭ অনুচ্ছেদে যে ‘খ’ ধারা যুক্ত হয়েছে সেখানে স্পষ্ট ভাষায় লেখা আছে- ‘কেউ যদি সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করে, তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।’ এমনকি এখানে ক্যাপিটাল পানিশমেন্টেরও (সর্বোচ্চ শাস্তি) ব্যবস্থা আছে।”
প্রধানমন্ত্রী সংসদকে বলেন, “অনেকেই বলছেন ইমার্জেন্সি হয়ে যাচ্ছে।”
শেখ হাসিনা জরুরি অবস্থা জারির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “ইমার্জেন্সি লাগবে কেন? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা আছে। তারা এ ধরনের সন্ত্রাস দমনে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। জনগণ আমাদের সাথে আছে। অবশ্যই এ অবস্থা থেকে আমরা উত্তরণ ঘটাতে পারব।”
তিনি আরও বলেন, “ইয়াজউদ্দিন সাহেব ইমার্জেন্সি দিতে পেরেছিলেন। কারণ, তখন তত্ত্বাবধায়ক প্রধান ছিলেন উনি নিজে। অর্থাৎ সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানও তিনি। এখন যদি ইমার্জেন্সি দিতে হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী লিখে দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। তারপর রাষ্ট্রপতি ইমার্জেন্সি ডিক্লেয়ার (ঘোষণা) করতে পারবেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সুশাসন কায়েম করতে পারি। আমরা অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।”
সহিংসতা ও নাশকতার জন্য বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটকে দায়ী করে তিনি অভিযোগ করেন, “বিএনপি নেত্রী লাশের উপর পা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান।।”
এছাড়াও টকশো যারা করেন তাদের শুভবুদ্ধি হবে কিনা, তা নিয়েও সংসদে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার সংসদ সদস্য নজিবুল বাশার মাইজভাণ্ডারী এক-দেড় মাসের জন্য সেনা-বিহীন জরুরী অবস্থা জারীর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গত ৫ জানুয়ারি লাগাতার অবরোধ কর্মসুচির ডাক দেন, যাতে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৮ জন মানুষ নিহত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অসংখ্য যানবাহন।