অবরোধের আগুণ

গাইবান্ধা ও গৌরনদীতে পুড়ে মরল ১০ জন

বরিশালে ট্রাকের ওপর শনিবার ভোরে পেট্রোলবোমা হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ফোকাস বাংলাঅবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় এবার প্রাণ গেল আরো ১০জনের।

এর মধ্যে গাইবান্ধায় পুলিশ পাহারার মধ্যে যাত্রীবাহী বাসে হামলায় দুই শিশুসহ সাত জন নিহত হয়েছেন।

আর বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ট্রাকে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ট্রাকচালকসহ তিনজন।

শুক্রবার রাত ১১টা থেকে শনিবার ভোরের মধ্যে এই দুটি হামলার ঘটনা ঘটে।

জেলার সদর উপজেলায় ঢাকাগামী নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি কোচে পেট্রোলবোমা হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে দুই শিশুসহ নিহত হয়েছেন পাঁচজন। এছাড়া কোচের চালক ও হেলপারসহ অন্তত ৩৯ যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।জেলার সদর উপজেলায় ঢাকাগামী নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি কোচে পেট্রোলবোমা হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে দুই শিশুসহ নিহত হয়েছেন পাঁচজন। এছাড়া কোচের চালক ও হেলপারসহ অন্তত ৩৯ যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গাইবান্ধায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭

গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের তুলশীঘাটের গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে যাত্রীবাহী বাসে ৭ জন নিহত হওয়া ছাড়াও দগ্ধ হয়েছেন অন্তত ৩৯ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।স্থানীয়রা জানান, “গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সিচা পাঁচপীর বাজার থেকে ঢাকাগামী নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি কোচ ৫০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে গাইবান্ধা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। রাত ১১টার দিকে কোচটি তুলশীঘাটের গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে পৌঁছলে পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসে আগুন ধরে যায়।”

দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই এক শিশুর মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আরও তিনজন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার সকাল সাতটায় মারা যায় সুজন নামে আরও এক শিশু। শনিবার বিকাল ও রাতে মারা গেছেন দুজন। এছাড়াও কোচের চালক ও হেলপারসহ অন্তত ৩৯ যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন।

নিহত সবাই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অধিবাসী। তারা হলেন- দক্ষিণ কালীর খামার গ্রামের খয়রব হোসেন দুলুর ছেলে সৈয়দ আলী (৪২), পশ্চিম চণ্ডিপুর গ্রামের সাইখ মিয়ার ছেলে হালিমা বেগম (৪২), চণ্ডিপুর গ্রামের শাজাহান আলীর মেয়ে সুমন মিয়া (২২), মধ্যপাড়া গ্রামের নাগের খামার গ্রামের বলরাম দাসের মেয়ে শিল্পী (১০) ও চণ্ডিপুর গ্রামের মোহম্মদ তারা মিয়ার ছেলে সুজন (১০)।

এদিকে এ ঘটনায় দগ্ধ তারা মিয়ার স্ত্রী সোনাভান (৩০) নামে এক গৃহবধু  আজ বিকাল সাড়ে ৪টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ সাজু মিয়া (২৫) নামে একজন শনিবার রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মারুফুল ইসলাম জানান, ‘সাজুর অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে আইসিউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।’

এছাড়াও ওই রাতে দগ্ধ দিনমজুর আবুল কালামের (৪০) অবস্থাও আশংকাজনক বলে জানিয়েছে তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে সদর থানার উপ-পরিদর্শক হাসান জানান, “পেট্রোলবোমা মারার সঙ্গে সঙ্গে কোচটির বেশিরভাগ পুড়ে যায়। ফলে কোচের অধিকাংশ যাত্রী দগ্ধ হন। স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।”

গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. আবু হানিফ জানান, “দগ্ধ ১১ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চার-পাঁচজনের অবস্থা বেশি আশঙ্কাজনক।”

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমেদ রাজিউর জানান, “অবরোধকারীরা রাতের আঁধারে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে ঢাকাগামী কোচে পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।”তিনি আরও জানান, “ঘটনাস্থল থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বাকি তিন জন হাসপাতালের নেওয়ার পথে মারা যান।”

জেলা পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম জানান, “ঘটনার পর পরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলসহ গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কে র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

নাশকতাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে বোমা মারার ওই ঘটনায় শনিবার একটি মামলা হয়েছে, শনিবার দিবাগত রাত দেড়টায় এ রিপোর্ট হালনাগাদ করা পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে সন্দেহভাজন সাত জনকে।

গৌরনদীতে নিহত ৩

এদিকে গৌরনদী উপজেলার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাহিলারায় শনিবার ভোর সোয়া ৫টায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হচ্ছেন- ট্রাকচালক ফরিদপুর জেলার বদরপুর গ্রামের বাসিন্দা ইজাজুল, হেলপার ফরিদপুর মোল্লাবাড়ী সড়কের বাসিন্দা মুন্নু ও চালকের শ্বশুর। তবে শ্বশুরের নাম জানা যায়নি।

পুলিশ সুপার (এসপি) একেএম এহসান উল্লাহ জানান, ‘পুলিশ লাশ শনাক্তের জন্য স্থানীয় অশোকাঠি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখেছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাহিলারা বাসস্ট্যান্ড এলাকা পার হওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো-ট-১৫৯৩২৬) পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে আগুন ধরলে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে মেহগনি গাছে ধাক্কা খায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা ট্রাকে আরেকটি পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করলে চালকের কেবিনে আগুন ধরে যায়।

ট্রাকের মালিক দুলাল মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া জানান, “ট্রাকটি পোলট্রি ফিড নিয়ে গাজীপুরের বাঘেরবাজার থেকে বরিশাল আসছিল। ট্রাকে চালক, হেলপার ছাড়াও চালকের শ্বশুর ছিলেন। লাশ শনাক্ত করতে তিনি ফরিদপুর থেকে গৌরনদী যাচ্ছেন।”

পুলিশ সুপার জানান, ‘তারা উজিরপুর থেকে ভুরঘাটা পর্যন্ত মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে আরআরএফ থেকে ২৭ জন পুলিশ ও ১০টি স্পটে আনসার রেখেছেন।’


প্রধান সংবাদ বিভাগের আরো খবর...
সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে  হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ
ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম
গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কোরবানির সুস্থ পশু চেনার উপায়, অসুস্থ গরু থেকে সাবধান কোরবানির সুস্থ পশু চেনার উপায়, অসুস্থ গরু থেকে সাবধান
এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ
জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি

গাইবান্ধা ও গৌরনদীতে পুড়ে মরল ১০ জন
(সংবাদটি ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)
tweet