স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমে জোটের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা জানান।
‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর’ সরাসরি হুকুমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দলবাজ সদস্যরা আন্দোলনরত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ক্রসফায়ারের নামে সমগ্র দেশকে বধ্যভুমিতে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দল।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন বলেন, বিনা ভোটের অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হুকুমে দলবাজ র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি’র কতিপয় সেবাদাস কর্তা ব্যক্তিরা আন্দোলনরত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন নৃশংস কায়দায় ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে সমগ্র দেশকে বধ্যভুমিতে পরিণত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত সর্বত্র ওই সমস্ত দলবাজ পিশাচ কর্মকর্তা কর্মচারীদের তালিকা প্রনয়ন করছে। দেশ আজ ভয়ংকর পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। জাতিকে সেই পুলিশি রিমান্ড থেকে মুক্ত করার জন্য অবিরাম সংগ্রামের কোনো বিকল্প নাই।
এতে বলা হয়, ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করে আওয়ামী লীগই রাজনৈতিক ভুল করেছে এবং সেই ভুলের খেসারত আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদেরকেই দিতে হবে। সেই দায় জনগণ নিবেনা। ২০দলীয় জোট ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে ঐতিহাসিক সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন বলেন, সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলনের পথ বন্ধ করে সরকারই জনগণকে রাজপথে নামতে বাধ্য করেছে। বেগম খালেদা জিয়াকে অঘোষিত কারাগারে রুদ্ধ করে সরকারের গদি রক্ষার স্বপ্ন কোনদিনই পূরণ হবেনা। গণআন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়েই জনগণ তাকে মুক্ত করবে।
গতরাতে গাইবান্ধায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি ককরা হয় বিবৃতিতে। হামলায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয় বিবৃতিতে।
এই ধরণের হামলায় বিএনপি তথা ২০দল জড়িত নয় এমন দাবি করে তিনি বলেন, আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সরকারই এ ধরণের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানো এবং নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে তা প্রচার ও প্রকাশের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী রাজনীতির স্বৈরতান্ত্রিকতা ও একনায়কতান্ত্রিকতার ঐতিহ্যে লালিত হাসিনা পুত্র জয় গতকাল অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে মুজিব বংশীয় রক্তের প্রতিধ্বণি করেছেন। রাজনীতির পাঠশালায় বাল্য শিক্ষা শ্রেণী অতিক্রম না করার আগেই ভাষণ দেওয়া শুভ লক্ষণ নয়। জয় সাহেবের মাতার পিতা মুজিবের রক্ষীবাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞে পুরো বাংলাদেশকে বধ্যভুমিতে পরিণত করেও মুজিবকে রক্ষা করতে পারেনি । পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জন্ম দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তাকেই সেই সংশোধনী বাতিল করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
আন্দোলনের তীব্রতায় সরকার অতিমাত্রায় ভীত হয়ে গুম, খুন, অপহরণ, দমনপীড়ণ, হামলা-মামলা এবং গ্রেপ্তার নির্যাতন চালিয়ে শেষ রক্ষা পেতে চায় বলেও বিবৃতিতে দাবি করেন সালাহ উদ্দিন তিনি। তিনি বলেন, এই স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অনির্দিষ্টকালের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি রোববার থেকে শুরু হওয়া ৭২ ঘণ্টার হরতাল পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে কর্মসূচি চলাকালে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করে জনগণের বিপক্ষ শক্তিতে পরিণত না হওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর আহবান জানানো হয়।