বাংলাদেশ সংলাপে একজন দর্শক জানতে চান আর কতদিন নিরাপত্তাহীনতার হুমকির মধ্যে জীবন যাপন করতে হবে। আরেকজন দর্শকের প্রশ্ন ছিল যে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের কোন পথই কি খোলা নেই ?
জবাবে প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, “আগে হরতাল অবরোধ প্রত্যাহার এবং সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। তারপরই কেবল সংলাপের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।”
তবে হরতাল অবরোধ প্রত্যাহার হলেও সংলাপের কোন গ্যারান্টি নেই বলে এসময় জানান তিনি।
তার অভিযোগ চলমান সহিংসতায় দেশীয়দের সাথে বিদেশী সন্ত্রাসীদেরও যোগসাজশ রয়েছে।
তিনি বলেন , “আগে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করুক। সহিসংতা বন্ধ করুক। তারপর আলোচনার বিষয়টি দেখা যাবে”।
অপর একজন দর্শক জানতে চান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না হলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যেতে পারে বলে অনেকেই যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করছেন আপনারা কি তার সঙ্গে একমত ?
জবাবে ‘সরকার অনমনীয় থেকে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাইলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে’ বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে সংকটের কোন সমাধান হবেনা।’
তিনি আরও বলেন, “ঢাকার বাইরে গণ-বিস্ফোরণ হয়ে গেছে। জঙ্গিবাদ আর জামায়াত যা-ই বলেন তা দিয়ে মুক্তি আসবেনা। রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান না হলে গৃহযুদ্ধ কেন, আমাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে”।
অপর দুই প্যানেল আলোচক বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হোসেন খালেদও সংকট নিরসনের জন্য সংলাপকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।
ফারাহ কবির বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাই ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত জেলা উপজেলা পর্যায় থেকে নানা ধরনের দু:সংবাদ আসছে।’
তবে চলমান সমস্যার সমাধান হতেই হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে হোসেন খালেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তণ আসতেই হবে।’ হরতাল বা অবরোধের মতো যেসব কর্মসূচি দেশকে আঘাত করে সে ধরনের কোন কর্মসূচির কোন সুযোগ থাকা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ফোর্স ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে আসা কঠিন হবে। তাই সংলাপে বসা উচিত।’
তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণ দেশ ফিরিয়ে দেন আমাদের”।
আরেকজন দর্শক জানতে চান চলমান সহিংসতা দমনে সন্দেহভাজন বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কি দেশকে আরো সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে?
জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নিচ্ছে।’ তবে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলতে কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে খন্দকার মাহবুব হোসেন তার দলের অন্তত ৪০ নেতাকর্মী বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছে এমন দাবি করে বলেন, “এসব ঘটনা বন্ধ করে সরকার সংকটের সমাধানে এগিয়ে না আসলে তা পরিস্থিতিতে আরও ভয়াবহ করে তুলবে”। সূত্র-বিবিসি