জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনের ফাঁসি, ছয়জনের যাবজ্জীবন এবং দুজনকে খালাস দিয়েছেন অাদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির হলেন, আশিক, রাজু, সোহান, হাসান ও আকরাম। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, রুপ, তপু, মাজহার, সোহাগ, সেতু ও অভি। আর মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন প্লাবন ও মাসুদ।
ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ রায় দেন। মামলা আসামি ১৩ জনের মধ্যে ৬ জনই পলাতক রয়েছে।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পেছনে নিয়ে জুবায়েরকে কুপিয়ে জখম করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরদিন ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) হামিদুর রহমান বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৩৭তম আবর্তনের ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মীর শাহীন শাহ পারভেজ।
গত ৩০ জানুয়ারি অভিযুক্তদের মধ্য সাতজনকে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল এবং ছয় জনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
মামলার ১৩ আসামি হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক (প্রাণিবিদ্যা), মো. রাশেদুল ইসলাম রাজু (দর্শন), খান মো. রইছ সোহান (প্রাণিবিদ্যা), জাহিদ হাসান (প্রাণিবিদ্যা), ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ (দর্শন), মাহবুব আকরাম (সরকার ও রাজনীতি), নাজমুস সাকিব তপু (প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান), মাজহারুল ইসলাম (ইতিহাস), কামরুজ্জামান সোহাগ (দর্শন), মো. নাজমুল হোসেইন প্লাবন (লোক প্রশাসন), শফিউল আলম সেতু (পরিসংখ্যান), অভিনন্দন কুন্ডু অভি (পরিসংখ্যান) ও মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ (ইতিহাস)। এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭তম আবর্তনের ছাত্র।
২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল জামিন বাতিল করলে কাঠগড়া থেকে মামলার চার আসামি পালিয়ে যান। তারা হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম, খান মো. রইছ, ইশতিয়াক মেহবুব ও মাহবুব আকরাম। আর মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন- রাশেদুল ইসলাম রাজু ও জাহিদ হাসান। পলাতক বাদে বর্তমানে জামিনে থাকা অন্য আসামিরা হলেন- শফিউল আলম, অভিনন্দন কুন্ডু, কামরুজ্জামান সোহাগ, মো. মাহমুদুল হাসান, মাজহারুল ইসলাম, নাজমুস সাকিব ও নাজমুল হোসেইন। এরমধ্যে মাহবুব আকরাম ও নাজমুস সাকিব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।