বিশ্বের ২৫টি দেশ থেকে আগত ৮৫ জন তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, ১২০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ১০০টি সরকারি সংস্থার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বসছে বিশ্ব-প্রযুক্তির মিলন মেলা। সোমবার থেকে এখানে শুরু হচ্ছে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৫।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস) গতবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই প্রযুক্তি সম্মেলনের আয়োজন করছে। সহযোগিতায় রয়েছে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
মোট ২৪টি সেমিনার, ৯টি কনফারেন্স এবং ১১টি প্রশিক্ষণ কর্মশালার পাশাপাশি ৪ দিনের প্রযুক্তি সম্মেলনে থাকছে ৪টি প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর মধ্যে রয়েছে ই-গভর্নেন্স এক্সপো, বেসিস সফট এক্সপো, মোবাইল ইনোভেশন এক্সপো এবং ই-কমার্স এক্সপো।
সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রাসেল টি আহমেদ জানিয়েছেন, সম্মেলনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ৮৫ জন বক্তা। ৫টি দেশের মন্ত্রী পরিষদ সদস্যদের নিয়ে থাকছে ‘মিনিস্টারিয়েল কনফারেন্স’, প্রযুক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণে বিশেষ সম্মেলন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ক্যারিয়ার বিষয়ক সম্মেলন এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপারদের নিয়ে ‘টাইটেনিয়াম কনফারেন্স’, ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স জোনের মতো নানা আয়োজন।
সম্মেলনে প্রযুক্তি বিশ্বের ভবিষ্যত বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরবেন আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিবিদেরা। সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন- আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের মহাসচিব হোউলিন ঝাও, টিপসি অ্যান্ড টাম্বলারের প্রতিষ্ঠাতা বয়েডলি পোলেন্টাইন, ক্লাউডক্যাম্প প্রতিষ্ঠাতা ডেভ নিয়েলসেন, টাই সিলিকন ভ্যালি প্রেসিডেন্ট ভেঙ্ক শুক্লা।
এছাড়াও বিশ্ব সেরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল থেকে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন গুগল সাউথ এশিয়ার হেড অব সেলস বেন কিং, গুগলের হেড অব এজেন্সি ডেভেলপমেন্ট বিকি রাসেল, মার্কেটিং স্পেশালিস্ট ক্যাটি স্যান্ডারস, গুগল স্পিচের সফটওয়্যার প্রকৌশলী রবি রাজকুমার, গুগলের পার্টনার ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার অক্ষয় সন্থালিয়া, গুগল সাউথ এশিয়ার ইন্ডাস্ট্রি অ্যানালিস্ট ফজল আশফাক, গুগল ট্রান্সলেটের সফটওয়্যার প্রকৌশলী আর্নে মৌসার, গুগল ডেভেলপের (জিডিজি) বাংলা কান্ট্রি ম্যানেজার জাবেদ সুলতান পিয়াস। অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ফেসবুক থেকে অংশ নিচ্ছেন- ফেসবুক ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর এবং হেড অব পাবলিক পলিসি আঁখি দাস, অ্যাকসেঞ্চার বাংলাদেশ চেয়ারম্যান অবিনাশ ভাসিস্তা, অগমেডিক্স সিইও এবং কো-ফাউন্ডার আইয়ান শাকিল, এনটিএফ থ্রি প্রকল্প পরিচালক মার্টিন লাব্বি, বিক্রয় ডটকম প্রধান মার্টিন মালস্ট্রম প্রমুখ।
সম্মেলনে এবার প্রথমবারের মতো দেয়া হচ্ছে ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রাখায় সরকারি পর্যায়ে ৪৭টি, বেসরকারি পর্যায়ে ৭টি এবং বিশেষ ক্যাটাগরিতে ৪টিসহ মোট ৫৮টি সম্মাননা পুরস্কার দেয়া হবে।
এরমধ্যে দেশের ৭টি বিভাগ থেকে একটি করে সেরা জেলা প্রশাসক, সেরা ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা ডিজিটাল সেন্টার, ডিজিটাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং একটি করে সেরা ডিজিটাল সিটি, ডিজিটাল পৌরসভা, ডিজিটাল হাসপাতাল, ব্যাংক এবং ই-ইনিশিয়েটিভ ও ই-উদ্যোগকে পুরস্কৃত করা হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইটিতে সেরা ৫টি উদ্ভাবন, একজন প্রযুক্তি নারী এবং অপর একজন প্রযুক্তি বন্ধুকে আজীবন সম্মাননা দেয়া হবে। এছাড়াও সম্মেলনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে ৪টি প্রতিষ্ঠানকেও মেলার শেষ দিন এই পুরস্কার দেয়া হবে।
সরকার ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের এই প্রযুক্তির মিলনমেলায় সহযোগী হিসেবে রয়েছে- অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ), বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলোজি (বিডব্লিউআইটি), সিটিও ফোরাম, আইএসপিএবি এবং সিলিকন ভ্যালি ভিত্তিক উদ্যোক্তা সংগঠন টাই বাংলাদেশ।