সংলাপে বসতে নাগরিক সমাজের প্রস্তাব ‘অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সরকারের নীতি-নির্ধারকদের অন্যতম তোফায়েল আহমেদ।
আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক অমিতাভ চক্রবর্তী এবং বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোস্তফা আবিদ খান উপস্থিত ছিলেন। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ডব্লিউটিও কার্যালয়ে সেবা খাতে বাণিজ্যবিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ফিরে বাণিজ্যমন্ত্রী আজ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পেট্রলবোমা দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যাকারীদের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে না।’
নাগরিক সমাজের এ প্রস্তাব নিয়ে সরকার কী ভাবছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, “তাঁদের ওই প্রস্তাব অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য। সন্ত্রাস, নাশকতা ও সন্ত্রাসী তৎপরতাকে আড়াল করার জন্য এবং একটি গণতান্ত্রিক দলকে তাদের সঙ্গে একই কাতারে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে তারা (নাগরিক সমাজ)।”
বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নাগরিক সমাজের পক্ষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা স্বাক্ষরিত তিনটি পৃথক চিঠি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের বরাবর পাঠানো হয়।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, “যারা মাকে সন্তানহারা করছে, সন্তানকে মা-হারা করছে, পেট্রলবোমা দিয়ে নিরীহ মানুষকে পোড়াচ্ছে, তাদের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই আসে না। শামসুল হুদা কেন? যে কেউই বলুক না কেন? তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যদি সংলাপ হতো, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সংলাপ করত।”
নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি অসাংবিধানিক বলে তা মানতে শুরু থেকেই নারাজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে এই দাবি আদায়ে গত ৬ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল, যাতে নাশকতায় ইতোমধ্যে ৬০ জনের অধিক মানুষ মারা গেছেন, দগ্ধ হয়েছেন কয়েকশত মানুষ।
নাশকতার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটকে ‘সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী’ বলে মন্তব্য করে আসছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। সেই সঙ্গে তা কঠোরভাবে দমনের হুঁশিয়ারিও দিয়ে আসছেন।
এমন অবস্থায় তাহলে এই রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমাধান কী- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, “আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। কোনো দেশ সন্ত্রাসের সঙ্গে আপস করলে, সে দেশ টেকে না।”
নাগরিক সমাজের সমালোচনা করে মন্ত্রী আরও বলেন, “ড. কামাল হোসেনসহ যাঁরা শোক জানাতে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা কি তাঁকে বলেছিলেন যে, ১৫ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারছে না, এসব (হরতাল-অবরোধ) বন্ধ করুন?”