বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। তবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হচ্ছে ১৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার থেকে। অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বুধবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আসা আফগানিস্তান। নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলার আগে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে করেছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
কাগজে-কলমে ও শক্তিমত্তার বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে আফগানিস্তান। তবে দুই দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত একমাত্র ওয়ানডে ম্যাচে গত এশিয়া কাপে জয়ী দলের নাম আফগানিস্তান, আর তাই একেবারে হাল ছেড়ে দিচ্ছে না আফগান সমর্থকরা। তবে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে আফগান জুজু কোনো কাজে আসবে না বলে জানালেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি, “আমরা এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছি, এবার আমাদের পালা। আমরা আগামী ম্যাচটি ভালো ক্রিকেট খেলব। এটা খেলতে পারলেই জয় আমাদেরই হবে। আমরা তাদের সঙ্গে একটি মাত্র ওয়ানডে খেলেছি, গত এশিয়া কাপে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঐ ম্যাচে আমরা জিততে পারিনি। তবে টি-২০ বিশ্বকাপে তাদেরকে হারিয়েছি আমরা। এবার ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে তাদের হারানোর পালা। আশা করি, প্রথম ম্যাচে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলব।”
প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যর্থতার পর অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘দলের সবাই ম্যাচকে গুরুত্বের সাথে নেননি।’
তবে আজ মাশরাফি জানালেন, “আমি বলিনি যে কেউ ম্যাচ সিরিয়াসলি নেয়নি। আমি বলেছিলাম- অনেকে প্রস্তুতির কথা চিন্তা করেছে। যার কারণে কিছুটা মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। দলের খেলোয়াড়রা অনুশীলনে কতটা কষ্ট করেছে এবং কিভাবে উইকেটের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের আগের ৪-৫ দিন আমরা কঠোর অনুশীলন করেছি। বিশেষ করে বোলাররা গত সপ্তাহে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে। প্রথম ম্যাচে দেখা যাবে তাদেরকে।”
সমর্থন খেলার অনেক বড় একটা ব্যাপার। অস্ট্রেলিয়াতেও নিজেদের পক্ষে গ্যালারীতে প্রচুর সমর্থক পাবেন বলে বিশ্বাস মাশরাফির, “এটা সত্য, আমরা দেশের মাটিতে অনেক সমর্থন পাই। দেশে খেলতে বেশি পছন্দ করি আমরা। কারণ ওখানে আমরা কানফাটানো সমর্থন পাই। দেশে কোন দলের বিপক্ষে খেলি, তা আমাদের মাথায় থাকে না। অস্ট্রেলিয়াতেও আমরা প্রচুর সমর্থন পাই এবং পাব। এটি এখানকার মানুষদের বিস্মিত করতে পারে। আশা করি, সমর্থকদের সামনে আমরা আমাদের সেরাটা খেলতে পারব।”
প্রথম ম্যাচকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানকে সম্মানের চোখেই দেখছেন মাশরাফি। আইসিসির সহযোগী সদস্য আফগানদের সাথে অনেকে বাংলাদেশের তুলনা করায় বিরক্ত নন নড়াইল এক্সপ্রেস, “তুলনা আসতেই পারে। যে কেউ তুলনা করে। আমরা এই তুলনাকে কিভাবে গ্রহণ করি, সেটাই আসল বিষয়। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটিকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ধরে নিয়েছি। আফগানিস্তানও তাই। আমরা তাদেরকে সম্মান করি। কে আমাদের কিভাবে তুলনা করছে তা আমাদের জন্য ভাবনার বিষয় নয়।”
ম্যাচে ভালো করতে হলে মাশরাফি পেস আক্রমণের পাশাপাশি ভরসা রাখছেন স্পিনেও। স্পিনারদের সাফল্য পাওয়াটাও এখন সময়ের ব্যাপার, জানালেন এমনটাই, “দেশে আমাদের স্পিনাররা দারুণ খেলে। ফলে তাদের উপর আমাদের নির্ভরতা বেশি। আমাদের দলে কার্যকর পেসারও আছে। তবে তারা এখনও তরুণ। কিন্তু তারা সম্ভাবনাময় এবং আশা করছি তারা তাদের কাজটা করে দেখাবে। স্পিনাররাও এখানে ভালো করবে বলে বিশ্বাস করি। আমাদের স্পিনাররা বিশ্বের যে কোন উইকেটে কার্যকর।”
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের লক্ষ্য সম্পর্কে জানাতে গিয়ে মাশরাফির কৌশলী জবাব, “এই মুহূর্তে তা বলা কঠিন। আমরা একটি একটি করে ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। আমরা যদি সম্ভাব্য সেরাটা খেলতে পারি তবে এগিয়ে যেতে পারব।”
কিছু সময়ের জন্য এটা প্রশ্ন হয়ে থাকল, মাশরাফিরা কি পারবেন আফগানদের হারিয়ে স্বপ্নের বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করতে?