প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেছেন, সংবিধান ভঙ্গ করে কেউ ক্ষমতা দখল করলে যে মৃত্যুদণ্ড, এখন এটি সবাই জানে। তাই কেউ ক্ষমতা দখল করতে আসবে না। উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে লাভ নেই।অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র আমরা এনেছি গণতন্ত্র সুরক্ষিত করতে। উনি (খালেদা জিয়া) গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছেন, আবার তাকিয়ে আছেন উত্তরপাড়ার দিকে যে, ওখান থেকে কেউ এসে ওনাকে ক্ষমতায় বসায় দেবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘যাদের আশায় (খালেদা জিয়া) পড়ে আছে, তারাও জানে, এভাবে ক্ষমতায় আসলে পরবর্তী পরিণতিটা কী হয়। জিয়াও বুঝে গেছে, এরশাদও বুঝেছে, আবার ২০০৭ সালে মইনুদ্দিন-ফকরুদ্দীন, তারাও দেখে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘ওদিকে কংগ্রেসম্যানদের কাছে ধরা, এদিকে ভারতের কাছে ধরা। তাদের যে ধোঁকাবাজি ভাঁওতাবাজি জনগণের কাছে আজ স্পষ্ট।’
এ সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বিএনপির চলমান অবরোধ-হরতালের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে যারা মানুষ পুড়িয়ে মারছে তারা শাস্তি পাবেই।’ তিনি বলেন, ‘কেন, কিসের আসায় বিএনপি আন্দোলন করছে? দুর্নীতির মামলা থেকে বাঁচতেই মানুষ খুন করছেন খালেদা জিয়া।’
সুশীলসমাজের ভূমিকার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, যাঁরা প্রমোশন এবং ব্যবসার জন্য তদবিরে আসতেন, তাঁরাই এখন ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় সুশীলের তালিকায়।’ এমন ১৩ জনের তালিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) যে হরতাল দিচ্ছেন, হরতালটা মানছে কে? ওনার অবরোধ মানছে কে? কেউ তো মানছে না। তাই বলে লজ্জাও নেই, শরমও নেই, সেটাও দেখছেন না। উনি শুধু মানুষ পুড়িয়ে মেরে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওনার কর্মসূচি পালন করতে চান।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘(খালেদা জিয়া) একদিকে আইএসআইয়ের এজেন্সি নিয়ে কাজ করছেন, অন্যদিকে আইএসের পথ ধরে তিনি আজ মানুষ খুন করে যাচ্ছেন।’
বোমা হামলাকারীদের ধরিয়ে দেওয়া পুলিশ ও এক রিকশাচালকের উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ এখন প্রতিরোধে নেমেছে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, তারাও একদিন বাংলার মাটিতে শাস্তি পাবেই পাবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় আরো বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট রাহাত খান, আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লী সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও এডভোকেট সাহারা খাতুন, দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন ও কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন।
আলোচনা শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, চার জাতীয় নেতা, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।
আলোচনা সভায় দলের অন্যান্য নেতারা একুশের চেতনার পাশাপাশি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির আন্দোলনের নাশকতার কড়া সমালোচনা করেন।