দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সহিংস রাজনীতির কারণে দেশের অর্থনীতির ক্ষতির মধ্যেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার এ সঞ্চয়ন এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করল।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০৫ কোটি মার্কিন ডলার। স্বাধীনতার পর এটাই দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ।”
এর আগে, গত ৭ আগস্ট রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ২২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছিল। তবে আমদানি ব্যয় বাড়া এবং অক্টোবরে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমার ফলে তা আবার ২১শ’ কোটি ডলারের ঘরে নেমে আসে। পরে গত ৫ নভেম্বর রিজার্ভ আবার ২২শ’ কোটি ডলারের ঘর অতিক্রম করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মূলত রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহ স্থিতিশলী থাকা এবং বেসরকারি খাতে বিদেশ থেকে ঋণ আসার কারণেই এই মইল ফলকে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
তারা জানান, প্রতি মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে বর্তমানের এ রিজার্ভ দিয়ে ৭ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বাংলাদেশের এই রিজার্ভ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম অবস্থানে থাকা ভারতের বর্তমান রিজার্ভ রয়েছে ৩১৩ বিলিয়ন ডলার। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তানের রিজার্ভ রয়েছে ১৩শ’ কোটি ডলারের কিছু বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১৩ দিনে ৫৯ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
আর ফেব্রুয়ারি মাসের আগ পর্যন্ত চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে অর্থ্যাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ৮৭২ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
কেবল রেমিটেন্স নয়, নাশকতার মধ্যে জাহাজিকরণ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।
অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে এক হাজার ৭৮০ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি।