রাজনৈতিক সংকটকে আড়াল করতেই আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদের জিকির তুলে দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ।গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রবিবার বিকেলে তিনি এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) প্রকাশ্য জনসভায় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড ঘোষণা করেছেন। আইন-আদালত, বিচার ব্যবস্থার কোনো কার্যকারিতা এরপরে আর অবশিষ্ট থাকে না। প্রধানমন্ত্রীর নিজের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১৩টিরও অধিক মামলায় তাকে কোনোদিন হাজিরাও দিতে হয়নি, মোকাবেলাও করতে হয়নি। নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থার কল্যাণে তাকে সকল মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে দুদকের আওতাধীন সকল অভিযোগ ও মামলায় দায়মুক্তি সনদ প্রদানের হিড়িক পড়েছে। মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগও শেষ পর্যন্ত আমলে নেওয়া হয়নি। হলফনামার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের স্বঘোষিত দুর্নীতির খতিয়ান দেশের জনগণ ও সারাবিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছেন; অথচ তাদেরও পুতপবিত্র চরিত্র সনদ প্রদান করেছে দুদক সরকারি প্রভাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, শাসন বিভাগ নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় আইনের শাসন কামনা করা যায় না। বিচার বিভাগে নগ্ন হস্তক্ষেপের ফলে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ন্যায়বিচার প্রত্যাশা তিরোহিত হয়েছে অনেক আগেই। তার পরও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা আইনীভাবেই মোকাবেলা করা হবে।’
সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলনকারী জনগণের লাশের স্তূপ মাড়িয়ে সারাদেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার প্রাণান্তকর কুৎসিত অপচেষ্টায় বাংলাদেশ নামক এই জনপদ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। ভয়ঙ্কর এই পুলিশী রাষ্ট্রে জনগণ আইন-আদালতের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। গণতন্ত্রের শরীরে এত রক্তপাত জনগণ ইতোপূর্বে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি।’
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা শাসকগোষ্ঠীকে আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যুক্তির বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ কখনই শুভ ফল বয়ে আনবে না। র্যাব, পুলিশ, বিজিবিকে রক্ষীবাহিনী স্টাইলে গণহত্যার হুকুম দিয়ে তার দায়ভার প্রধানমন্ত্রী নিজের কাঁধে তুলে নিলেও এর জন্য দায়ী কেউই বিচারের হাত থেকে রেহাই পাবে না। অতএব, স্বৈরতান্ত্রিকতা, একনায়কতান্ত্রিকতা পরিত্যাগ করে গণতন্ত্রের পথে আসুন। দেশকে বাঁচান, মানুষ বাঁচান এবং নিজেরাও বাঁচার চেষ্টা করুন।’