বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ ‘নিখোঁজে’র ৮দিন পর উদ্বেগ প্রকাশ ও নিন্দা-প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর বিএনপি।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বুধবার বিকেলে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস ও সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল এ উদ্বেগ প্রকাশ ও প্রতিবাদ জানান।
মির্জা অাব্বাসের প্রেসসচিব জাহাঙ্গীর অালম মিন্টুর স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বিএনপির দুই নেতা বলেন, ‘বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উত্তরার একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তারা দাবি করেন, অবিলম্বে সালাহ উদ্দিনকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় তার পরিবারের কাছে ফেরত দিতে হবে। নইলে এর পরিণতি শুভ হবে না। অন্যথায় এ জন্য একদিন তাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
তারা বলেন, ‘১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর গুমের রাজনীতি আওয়ামী লীগ শুরু করেছে। রাজনীতির সকল স্বাভাবিক গতি পদদলিত করে সরকার যে নজির স্থাপন করেছে, তা মানবাধিকারের জঘন্যতম লঙ্ঘন। আন্দোলন ঠেকাতে যে হামলা-মামলা, নির্যাতন ও গুম চলছে তা একনায়ক হিটলারের নাৎসী বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।’
আব্বাস ও সোহেল বলেন, ‘সরকারের জনসমর্থন শূন্যের কোটায়। জনসমর্থহীন অবৈধ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে গুমের রাজনীতি শুরু করেছে। এর আগে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী আলমসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম-হত্যা করা হয়েছে। আমরা জানি না, গত ৮ দিনে সালাহ উদ্দিনের ভাগ্যে কী ঘটেছে?’ একজন জাতীয় নেতাকে তুলে নেওয়া হলেও সরকার এ নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে মন্তব্য করেন তারা।
সরকারের উচ্চমহল থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের দেওয়া বক্তব্যকে অমানবিক, নিষ্ঠুরতম পরিহাসমূলক বক্তব্য অভিহিত করে তারা আরও বলেন, ‘তাদের এ সব বক্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক। এর নিন্দা করার ভাষাও আমাদের নেই।’
নেতারা বলেন, ‘সরকারকে বলব গণদাবি মেনে গুম-খুনের রাজনীতি ছেড়ে সংলাপের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবিলম্বে সকলের অংশগ্রহণের নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় পৃথিবীর সকল স্বৈরশাসকের মতো বর্তমান সরকারকেও করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি থেকে মির্জা অাব্বাস ও হাবিব উন নবী খান সোহেল পলাতক অাছেন। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, তারা দুজনেই অান্দোলনের মাঠে গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে অনুপস্থিত। এই দুই নেতা জানুয়ারির অাগে সভা-সমাবেশে অান্দোলনে মাঠে নামলে সরকার নড়ে যাবে বলে হুমকি দিয়েছেন একাধিকবার। যদিও অান্দোলনের কর্মসূচি ঘোষিত হওয়ার পর কালেভদ্রে সোহেলকে ঝটিকা মিছিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেলেও মির্জা অাব্বাস অাছেন একেবারে অাড়ালে।
নেতাকর্মীদের ভাষ্য, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে অারাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর গুলশানে দলটির একাধিক সিনিয়র নেতারা গেলেও মির্জা অাব্বাস নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। অংশ নেননি কোকোর জানাজায়ও। এই পরিস্থিতিতে মাঝে মাঝে অজ্ঞাত স্থান থেকে এ দুজনের নামে বিবৃতি পাঠানো হয়।