দেড় মাসের উত্তাপ-উত্তেজনা, আলোচনা-সমালোচনা শেষে অন্তিম ও চূড়ান্ত প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপের একাদশ এ আসর।
কার হাতে উঠবে ক্রিকেটের সবচাইতে মর্যাদাপূর্ণ স্বর্ণালি শিরোপা? বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল অস্ট্রেলিয়া কি পঞ্চমবারের মতো শিরোপা জিতে নিজেদের আরো উঁচুতে নিয়ে যাবে? নাকি এবারের আসরের টানা আট ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠা নিউজিল্যান্ডের হাত ধরে নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাবে ক্রিকেট-দুনিয়া?
এমসিজি নামে পরিচিত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা শুরু হবে রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে। এবারের আসরে একমাত্র অপরাজিত নিউজিল্যান্ড অপরিবর্তিত দল নিয়ে খেলতে নামবে। অস্ট্রেলিয়া দলেও পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম।
অন্যতম ‘ফেভারিটে’র মর্যাদা নিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। ফাইনাল ঘরের মাঠে হবে বলে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মাইকেল ক্লার্কের দলকে এগিয়ে না রেখে উপায় নেই। এমসিজিতে সর্বশেষ ছয়টি ম্যাচেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে নিউজিল্যান্ডকেও একটা তথ্য অনুপ্রাণিত করতে পারে। এই বিখ্যাত মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে চারবার হারিয়েছে কিউইরা। এর মধ্যে সর্বশেষ এমসিজি জয় ছিল ২০০৯ সালে। এবারের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়াকে নাটকীয়ভাবে এক উইকেটে হারানোর আত্মবিশ্বাস তো আছেই।
অকল্যান্ডে গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচে দুই দলের দুই বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক ও ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত বোলিং কারো পক্ষেই ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। ফাইনালে এ দুজনের দিকে চোখ রাখতেই হবে। বিশ্বকাপের সেরা বোলারের লড়াইয়ে স্টার্ক আর বোল্ট সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। টিম সাউদি বা মিচেল জনসনও ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন। তেমনি ব্রেন্ডন ম্যাককালাম-মার্টিন গাপটিল বা ডেভিড ওয়ার্নার-স্টিভেন স্মিথদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং খেলার চেহারা পাল্টে দিতে পারে।
দুজনের দিকে অবশ্য আলাদা করে দৃষ্টি রাখতেই হবে। ফাইনালের ঠিক আগের দিন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক জানিয়ে দিয়েছেন, এটাই তাঁর শেষ ওয়ানডে হতে যাচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার ড্যানিয়েল ভেট্টরিকেও আর বিশ্বকাপে দেখা যাবে না। বিদায়বেলা রাঙিয়ে রাখতে দুজনই নিশ্চয়ই উন্মুখ।
ব্যক্তিগত অর্জনের হাতছানিও ক্লার্কের সামনে। আর ৯৩ রান করতে পারলে রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও মার্ক ওয়াহর পর অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আট হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করবেন তিনি।
বোল্ট আর স্টার্কের সামনেও বিশ্বকাপের এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার ‘রেকর্ড’ স্পর্শ করা বা ভেঙে দেওয়ার সুযোগ। ২০০৭ বিশ্বকাপে ২৬ উইকেট নিয়ে কৃতিত্বটা অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রার অধিকারে। ২১ উইকেট নিয়ে বোল্ট আপাতত এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট-শিকারি। ২০ উইকেট নিয়ে স্টার্কের অবস্থান দ্বিতীয়। দুই আয়োজকের ‘শিরোপা-যুদ্ধ’র পাশাপাশি দুই বাঁহাতি পেসারের ব্যক্তিগত লড়াই বাড়তি উত্তেজনা ছড়িয়ে দিচ্ছে এমসিজিতে।