ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র তুলে জমা দিতে না পারায় তিন দিন আগেও যিনি সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, সেই ঢাকা-৭ এর স্বতন্ত্র সাংসদ হাজি সেলিমই এখন দল মনোনীত প্রার্থী সাঈদ খোকনের হয়ে মাঠে নেমেছেন।
শুক্রবার চকবাজার শাহী জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে সাংবাদিকদের সামনে খোকনের হয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দেন তিনি। নামাজ শেষে মহানগর আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা গলাগলি করে মসজিদের বাইরে এলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়।এসময় হাজী সেলিম সাংবাদিকদের আর কিছু না বললেও সাঈদ খোকন বলেন, “সেলিম ভাই নামাজ পড়ার দাওয়াত দিয়েছিলেন। তাই তার সঙ্গে নামাজ পড়লাম।”
এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ‘সেলিম-সাঈদ ভাই ভাই, আর কোন ভয় নাই’, ‘সাঈদ-সেলিম যেখানে, জয় হবে সেখানে’ ইত্যাদি নানা স্লোগান শুরু করেন। এরপর মসজিদ থেকে খোকনকে নিয়ে লালবাগে নিজের বাসা আরজু কপ্লেক্সে যান হাজি সেলিম। সেখানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সহ সবাইকে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করেন হাজী সেলিম।
সাঈদ খোকন ছাড়াও মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ছাত্রলীগ সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বাসায় হাজী সেলিম ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শ ও অনুরোধে সাঈদ খোকনের পক্ষে একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হন হাজী সেলিম।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
পাশাপাশি গতকাল রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতা, দলীয় সংসদ সদস্যদের সিটি নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীদের জিতিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
‘প্রাক্তন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ২০০৪ এর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় মানবঢাল সৃষ্টি করে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিলেন’ গতকালের সভায় ঢাকা মহানগরীর একজন এমপি সেবিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিকাতর হয়ে বলেন, “হ্যাঁ উনি সেদিন আমাদের সবাইকে যেভাবে রক্ষা করেছে। তা কোন কিছুর মূল্যে পরিশোধ করা সম্ভব না।”
‘তার ছেলে মেয়র পদে নির্বাচন করছে, তাকে জয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।