রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার জন্য দুই-তিন ঘণ্টা সময় পাবেন জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। আজ সোমবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মন্ত্রী বলেন, যথাশিগগির কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হবে। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে যে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে, এ সময়টুকু তাঁকে দেওয়া হবে। আপিল বিভাগের রিভিউয়ের রায়ের পর সর্বশেষ পদক্ষেপ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার জন্য তিনি দুই-তিন ঘণ্টা সময় পাবেন।
আনিসুল হক আরো জানান, কাদের মোল্লার রিভিউ রায়ে বলা হয়েছে যে, এখানে জেল কোডের বিধান কার্যকর হবে না। কাজেই কামারুজ্জামানও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য কয়েক ঘণ্টা সময় পাবেন।
এ সময় কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী।
আজ সোমবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।
এর আগে ২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।