জাতীয় নাগরিক কমিটির গণসংবর্ধনা প্রদান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দেশরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত

ভারতীয় পার্লামেন্টে ‘সীমান্ত বিল’ পাস ও সীমান্ত চুক্তি কার্যকর এবং ‘জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের’ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ গণসংবর্ধনা দেয় জাতীয় নাগরিক কমিটি।ভারতীয় পার্লামেন্টে ‘সীমান্ত বিল’ পাস ও সীমান্ত চুক্তি কার্যকর এবং ‘জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের’ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

আজ শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেখ হাসিনাকে এই সংবর্ধনা দেয়া হয়।

সংবর্ধনা গ্রহণের পর শেখ হাসিনা বলেন, যতোটুকু আর্থ-সামাজিক উন্নতি আমরা করতে পেরেছি তার সবই বাংলার মানুষের দান। এ সম্মান আমার নয় বাংলার মানুষের। বাংলার মানুষের প্রতি আমি এ সম্মান উৎসর্গ করলাম।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কি অর্জন করেছি সেটা বড় কথা নয়। সামনে আরো এগিয়ে যেতে হবে। জাতির জন্য যে কোনো আত্মত্যাগের জন্য আমি প্রস্তুত আছি। বাঙালি জাতির জন্য আমি সবকিছু করবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ব সভায় মর্যাদার সাথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

ভারতীয় পার্লামেন্টে ‘সীমান্ত বিল’ পাস ও সীমান্ত চুক্তি কার্যকর এবং ‘জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের’ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ গণসংবর্ধনা দেয় জাতীয় নাগরিক কমিটি।এদিকে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দলে দলে মিছিল নিয়ে এই নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেয়। লাখো লোকের উপস্থিতিতে বিশাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কনায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে শেখ হাসিনার হাতে নৌকার প্রতিকৃতির স্মারক তুলে দেন নাগরিক কমিটির সভাপতি সৈয়দ শামসুল হক।

আর অভিজ্ঞানপত্র পাঠের পর কাঠের ওপর শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি সম্বলিত একটি স্মারক আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর হাতে তুলে দেন অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য রাখেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি সৈয়দ শামসুল হক। পরে তার রচিত ও আলাউদ্দিন আলীর সুরে একটি সংগীত পরিবেশন করা হয়। সংগীত শেষে নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপার নেতৃত্বে একটি দলীয় নৃত্য পরিবেশন করা হয়।

পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অনুপম সেন, অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জামান, ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন।

তাদের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকে সংগীত পরিবেশনা। মিতা হক ও মহিউজ্জামান চৌধুরী গেয়ে শোনান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী!’ মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, ঢাকার দুই মেয়র, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, জাতীয় প্রেসক্লাবের নতুন কমিটির সভাপতি শফিকুর রহমান, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী নেতা, আইনজীবী, পেশাজীবীসহ ঢাকা এবং আশপাশের জেলাগুলোর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় নাগরিক কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘দেশরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।

ভারতীয় পার্লামেন্টে ‘সীমান্ত বিল’ পাস ও সীমান্ত চুক্তি কার্যকর এবং ‘জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের’ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ গণসংবর্ধনা দেয় জাতীয় নাগরিক কমিটি।নাগরিক কমিটির সভাপতি ও লেখক সৈয়দ শামসুল হক তাঁকে এই উপাধিতে ভূষিত করে বলেন, আজ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের প্রারম্ভে আবশ্যিকভাবে ‘দেশরত্ন’ শব্দটি ব্যবহার হবে। আমি সবার পক্ষ থেকে তাঁকে ‘দেশরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত করছি। এ সময় উপস্থিত জনতা করতালির মাধ্যমে এই উপাধিকে স্বাগত জানায়। যদিও বেশ কয়েক বছর পূর্বে শেখ হাসিনাকে দেশরত্ন উপাধি দিয়েছিলো।

তিনি বলেন, এখানে দাঁড়িয়ে ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছেন, তিনি এ দেশের স্বাধীনতা-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি এনে ছাড়বেন। স্বাধীনতা এনেছেনও। আর আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, শেখ হাসিনা যখন নির্বাসনে ছিলেন তখনো একটা সংস্কৃতি ছিলো। তা হলো ভয়ের সংস্কৃতি, শঙ্কার সংস্কৃতি। কিন্তু তিনি তা অতিক্রম করে দেশে ফিরেছেন। সাহসের সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছেন। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে তিনি বিচারের সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছেন।

ড. আতিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এখন দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের রপ্তানি বেড়েছে ২ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মাথা পিছু আয়ের পরিমাণ বেড়েছে। দারিদ্র্যতার হার কমার পাশাপাশি ধনী-গরীবের বৈষম্য কমেছে। বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে স্থিতীশীল ও গতিশীল অর্থনীতির দেশ।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান ক্রিকেটসহ ক্রীড়াঙ্গণে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সব ধরনের সহযোগিতার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় আধুনিক ক্রীড়া অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। তাঁর অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে সক্ষম হয়েছে।

শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন বলেন, শেখ হাসিনার সরকার আমলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও রায় কার্যকর হওয়ায় শহীদদের আত্মা শান্তি পাচ্ছে। আমরা শহীদ পরিবার স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছি। বীরঙ্গাণাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় নারী জাতির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই।

ড. অনুপম সেন বলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই বিতরণ কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। বিদেশীদের কেউ যদি এ দেশে আসে তাহলে তারা দেখতে পারবে শিক্ষার পূণ্যভূমিতে এসেছে। বর্তমান সরকারই শিক্ষার আলো দান করেছে।

ভারতীয় পার্লামেন্টে ‘সীমান্ত বিল’ পাস ও সীমান্ত চুক্তি কার্যকর এবং ‘জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের’ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ গণসংবর্ধনা দেয় জাতীয় নাগরিক কমিটি।ড. খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, আজকে আমাদের উপস্থিতি শুধু সংবর্ধনা দিতে নয়। আমরা এসেছি, নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি, আপনার নেতৃত্বের প্রতি নাগরিকের সমর্থন ও আস্থা জানানোর জন্য। তিনি বলেন, আমাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক যে অর্জন তা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেই। দারিদ্র্যের হার কমেছে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। একজন দিনমজুরও সারাদিন পরিশ্রম করে ১১ কেজি চাল ক্রয় করতে পারে। এসব হচ্ছে কেবল নানামুখী নীতি বাস্তবায়নের ফলে। টেকসই উন্নয়নে সবার অংশীদার হতে হবে।

ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, বিগত সময়ে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি বার বার নষ্ট করা হয়েছে। আর শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছেন। আমাদের মর্যাদাবান করেছেন, সম্মানিত করেছেন। গত ৭০ বছরে যে সমস্যার সমাধান করা যায়নি, শেখ হাসিনা সেই সমস্যার সমাধান করেছেন। পার্বত্য চট্রগ্রামের শান্তি চুক্তি, ভারতের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি, সমুদ্রসীমা বিজয় অর্জন করেছেন। এখন মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়ন করছেন। অথচ এর চেয়ে কম কাজ করে বড় বড় কেউ কেউ বিদেশে সম্মান পেয়েছেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটির এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুপুর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাদ্য বাজিয়ে মিছিল নিয়ে সংবর্ধনাস্থলে আসতে থাকেন আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন সামাজিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী। বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠে ভিজে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন তারা।


আলোচিত বিভাগের আরো খবর...
সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে  হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ
ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম
গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কোরবানির সুস্থ পশু চেনার উপায়, অসুস্থ গরু থেকে সাবধান কোরবানির সুস্থ পশু চেনার উপায়, অসুস্থ গরু থেকে সাবধান
এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ
জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দেশরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত
(সংবাদটি ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)
tweet