নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। আগামী ২৫ জুন তিনি চার তারকা জেনারেলের পদমর্যাদায় সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেবেন। একই দিন বর্তমান সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূইয়া অবসরে যাবেন। আজ বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানায়।
আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিএ-১৭৩৮ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, এনডিসি, পিএসসিকে ২৫ জুন ২০১৫ তারিখ অপরাহ্নে জেনারেল পদে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক চিফ অব স্টাফ অব দ্য ডিফেন্স সার্ভিসেস (টেনার অব অ্যাপয়েন্টমেন্ট) অর্ডার, ১৯৮১ অনুসারে উক্ত তারিখ অপরাহ্ণ থেকে ২৫ জুন ২০১৮ তারিখ অপরাহ্ন পর্যন্ত তিন বছরের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ প্রদান করা হলো।’
লে. জেনারেল শফিউল হক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের ভাই।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া, এসবিপি, এনডিসিকে ২৫ জুন ২০১৫ তারিখ অপরাহ্ণে সেনাবাহিনীর প্রধানের চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হইল। জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া এসবিপি, এনডিসি প্রচলিত বিধি অনুসারে অবসর সংক্রান্ত প্রাপ্য আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রাপ্য হবেন।’
এদিকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, লেফটন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শফিউল হক ১৯৫৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের ১৮ জুন তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে কমিশন লাভ করেন। তিনি তাঁর ব্যাচে শ্রেষ্ঠ ক্যাডেট নির্বাচিত হন এবং ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।
শফিউল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ-তে স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিফেন্স স্টাডিজে স্নাতকোত্তর এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বর্তমানে পিএইচডি করছেন।
দেশ ও বিদেশে সেনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন শফিউল হক। তিনি ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এবং মিরপুর স্টাফ কলেজের একজন গ্রাজুয়েট। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসের ফোর্ট লেভেনওয়ার্থের কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী মিশনে যাওয়া প্রথম দিকের সেনা কর্মকর্তাদের একজন শফিউল হক। ১৯৮৮/৮৯ সালে তিনি পর্যবেক্ষক হিসেবে ইরাকে যান। পরে ২০০৬/০৭ সালে ইউএনএমইইর ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ায় দায়িত্ব পালন করেন।
শফিউল হক বেড়াতে খুব পছন্দ করেন। তিনি ভালোবাসেন গলফ খেলতে। তাঁর স্ত্রীর নাম সোমা হক। এ দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।