গ্রামীণব্যাংককে নিজের আয়ত্তে রাখতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন- এমন কথা নানাভাবে জানা গেলেও এই প্রথম এমন অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফাঁস হয়ে যাওয়া হিলারি ক্লিনটনের হাজার হাজার ই-মেইলের মধ্য থেকে এমন সাতটি ই-মেইল পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি হিলারি ক্লিনটনের গোপন ই-মেইল মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতে গেলে তারা সেটা ‘পাবলিক’ করে দেয়। সেখানে প্রায় দুইশ ই-মেইলের মধ্যে অন্তত ৭টিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ই-মেইল আছে। যাতে ইউনুস হিলারির কাছে ম“ চেয়েছেন। এ প্রতিবেদকের কাছে আসা এমন ক’টি ই-মেইল থেকে জানা যায়, ‘গ্রামীণ ব্যাংকে নিজের অবস্থান ফিরে পাওয়া এবং সেখানে তার অবস্থান সুসংহত করতে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস।’ এ মেইলগুলো ড. ইউনূস নিজে লিখেছিলেন হিলারি ক্লিনটনের উদ্দেশে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের তৎকালীন কর্মকর্তা মেলানি ভিরবারের কাছে লেখা এ মেইলগুলো হিলারিকে ‘ফরওয়ার্ড’ করা হয়েছিল।
হিলারি ক্লিনটনের প্রকাশিত সাত হাজার মেইলের মধ্যে ৩১৭টি মেইলে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এসেছে। তার বেশ কয়েকটিতেই আছে গ্রামীণ ব্যাংকের কথা।
কিছুক্ষেত্রে যে আইডি থেকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে মেইল পাঠানো হয়েছে, ক্লাসিফাইড হিসেবে তাদের পরিচয় মুছে দেওয়া হয়েছে। তবে একাধিক মেইলে উল্লেখ আছে যে ওই মেইলগুলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে পাঠানো হচ্ছে, অথবা ওই মেইলগুলো গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কিত।
গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে মেইল চালাচালি শুরু হয় ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর।
২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর আরেকটি মেইল পাঠানো হয় মেলানিকে। এতেও প্রেরকের অংশটি সাদা রাখা হয়। মেইলের বেশ কিছু অংশ মুছে প্রকাশ করা হেয়েছে। তবে নিচে একটি নোটে পুরোপুরি প্রকাশ করা হয় ইউনূসের পরিস্থিতি। বিষয় হিসেবে লেখা হয়, যখন আমরা ভাবছিলাম সবকিছু শান্ত হয়ে গেছে।
ই-মেইলের একেবারে নিচে যোগ করা একটি নোটে লেখা- প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নোবেল বিজয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে বিদেশী সাহায্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অন্য কোম্পানিতে পাঠানোর যে অভিযোগ সেসব পুনরায় তদন্ত করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক উদাহরণ তৈরি করেছে। টাকা আত্মসাৎ করে ধোঁকা দেওয়াটাও একটা উদাহরণ। এসব আর কিছুই না, টাকা দিয়ে জনগণের টাকা নিয়ে নেওয়ার একটা প্রক্রিয়া মাত্র। দরিদ্রদের জীবনে এতে কোনোই উন্নতি আসেনি। বরং তারা শুধু আরো বেশি বিদেশী সাহায্য পাওয়ার দাবার ঘুটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।’
শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে মেইলে বলা হয়, বাংলাদেশের মানুষ গিনিপিগ হয়েছে, আমি কখনো এটা সমর্থন করিনি আর এখন প্রতিবাদ করছি।
মেইলে বলা হয়, দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, আগে গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের অংশ ছিলো ৬০ শতাংশ, এখন সেটা মাত্র ২৫ শতাংশ। মনে হয় মি. ইউনূস সরকারের তহবিল সম্ভব হলে পুরোই খালি করে দিতে চান। কিন্তু সরকার সেটা হতে দিতে চায় না।
ওই মেইলটিতে বলা হয়, তিনি জানতে চেয়েছিলেন সরকার ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য আবার তদন্ত পরিচালনা করবেন কিনা? প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘গ্রামীণ ব্যাংককে এমন করে ধরে রাখা হয়েছে যেনো সেটা ব্যক্তিগত সম্পত্তি। সেটারও তদন্ত হবে। গরীবরা এখানে শিকার হচ্ছেন। তাদের মিষ্টি কথায় ভোলানো হচ্ছে। অবশেষে সবই সামনে আসছে।
বলা হয়, শেখ হাসিনা গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি ইউনূসের আকর্ষণকে তার ক্যান্টনমেন্ট বাড়ির প্রতি খালেদা জিয়ার আকর্ষণের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক জনগণের সম্পত্তি। ভালবাসার বাইরে সেটা বেসরকারিকরণ হয়েছে। ইউনূস সাহেব গ্রামীণ ব্যাংকের প্রেমে পড়েছেন। গরীবের টাকা নিয়ে কেউ খেলতে পারে না।’
ইউনূসের কিছু মেইল সরাসরি হিলারি ক্লিনটনকে না পাঠিয়ে মেলানি নামের একজন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। তিনি পরে সেগুলো হিলারি ক্লিনটনের কাছে ফরোয়ার্ড করেন।
উইনূসের মেইলের সঙ্গে সম্পর্কিত মেলানির নাম প্রকাশ করা হলেও এক বা একাধিক ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি যারা ইউনূসের বার্তা হিলারির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন অথবা ইউনূসের জন্য হিলারির কাছ থেকে বার্তা পেয়েছেন।
একটি মেইলে দেখা যায়, ‘ইউনূস এখনো তার গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী’ উল্লেখ করে হিলারি ক্লিনটনকে একটি বার্তা ফরোওয়ার্ড করেন মেলানি।
মূল মেইলে প্রেরকের ঠিকানার অংশটি সাদা করে দেওয়া হলেও পাশেই লিখা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হয়ে এই ই-মেইল পাঠানো। ই-মেইলটির বিষয় হিসেবে লেখা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা।
মেইলটি এ রকম: প্রিয় মেলানি, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। জাতিসংঘের অ্যাসেম্বলি মিটিংয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ওয়াজেদের আমেরিকা ভ্রমণের ব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিজ দীপু মনি সেক্রেটার ক্লিনটনকে ফোন করবেন ১৬ সেপ্টেম্বর। সেখানেই যদি সম্ভব হয় তাহলে গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়টা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে তুলবেন। দয়া করে চেষ্টা করবেন গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়টা নিয়ে একটু কথা বলতে।
আমরা বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে আমাদের সমস্যাগুলো জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটা বৈঠকের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু প্রায় ছয় মাস হতে চললো, সেখান থেকে কোনো জবাব পাইনি।
দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আমাকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম পাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখনো একটি শব্দও বলেননি। আপনি নিশ্চয়ই সমস্যার গভীরতা টের পাচ্ছেন।
আমি আশা করি আপনাকে বিস্তারিত বোঝাতে পেরেছি। আর কি করা উচিত হবে সেটাও বোঝাতে পেরেছি। ধন্যবাদ সহযোগিতার জন্য। এইচকে (হিলারি ক্লিনটন)-কে আমার শ্রদ্ধা জানাবেন। সিজিআই এবং হিলটন নিয়ে দ্রুতই দেখা হবে। - ইউনূস
২০০৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মেলানিকে পাঠানো আর একটি মেইল রয়েছে সেখানে। তাতে ওই দিনই বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত ‘Prime Minister Hasina Warns‘ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে হিলারির উদ্দেশে ইউনূস লিখেন, “বাংলাদেশের দৈনিকটিতে প্রকাশিত খবরটি দেখবেন। পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী কি বলেছেন সেটা নিয়েই খবরটি। হাইলাইট করা অংশটিতে প্রধানমন্ত্রী মূলত আমাকেই বুঝিয়েছেন, সরাসরি নামে নয়, বর্ণনায়। যদি পারেন আমার সম্পর্কে তার ভয়াবহ মনোভাব দূর করার একটি পথ খুঁজে বের করুন। আপনাকে শান্তির দূত হবার আহবান জানাচ্ছি। তা না হলে কোনো কারণ ছাড়াই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী জেনারেল অ্যাসেম্বলি মিটিংয়ের জন্য নিউইয়র্ক যাবেন। সেখানেই হয়তো শেখ এইচের সঙ্গে দেখা হবে।”
মেইলটি মেলানি হিলারিকে ফরোয়ার্ড করেন, ‘হাসিনা ও ইউনূসের চলমান কাহিনী’ লিখে। সেখানে মেলানি যোগ করেন, ইউনূসের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবকিছুই কঠিন করে তুলছেন। স্বাস্থ্য কার্যক্রম নিয়ে যে পরিকল্পনার কথা আপনার সঙ্গে তার হয়েছিলো সেটাতে সরকার রাজি হয়নি। ইউনূসের আশা এমন কোনো পথ নিশ্চয়ই আছে যেটা দিয়ে তাকে নিশ্চিত করানো যাবে যে ইউনূস রাজনীতিতে আগ্রহী নন মোটেও এবং দেশকে একটি আদর্শ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে প্রধানমন্ত্রী ইউনূসকে ব্যবহার করতে পারেন। কিছু ব্যক্তিগত বিরোধও আছে যেটার গভীরতা ইউনূস পরিমাপ করতে পারছেন না। অগ্রগতি খুবই খারাপ।
জবাবে ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ এ হিলারি লিখেন, আগামীকাল ইউনূসের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। দু’জনেই হিলটন ফাউন্ডেশন নিয়ে কথা বলতে চাই। সেখানেও আরো বেশি কিছু জানতে পারবো।
নরওয়ের ন্যাশনাল টিভি এনআরকে ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর ‘কট ইন মাইক্রোক্রেডিট’ নামে যে প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করে আর এর ভিত্তিতে বিডিনিউজ ২৪ ডটকম যে খবর প্রচার করে তাও উঠে এসেছে হিলারির মেইল চালাচালিতে।
তাকে জানানো হয়, ডকুমেন্টারি মতে ইউনূস টাকা গ্রামীণ কল্যাণে ট্রান্সফার করেছেন যেটা কিনা কোনোমতেই ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিলো না।
আর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণ ব্যাংক যে কথা বলেছে তাও হিলারিকে জানানো হয়। এতে গ্রামীণের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণ কল্যাণের মধ্যে কোনো ভুল চুক্তি নেই। সেই ভিত্তিতেই ব্যাংক থেকে ৩,৯১৭ মিলিয়ন টাকা প্রদান করা হয়। ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকের বোর্ড। ধীরতার সঙ্গে, বিশ্বাসের সঙ্গে এবং ভালো উদ্দেশ্যেই গরীবদের সাহায্য করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়’ বলে জানায় গ্রামীণ ব্যাংক।
আর একটি মেইলে দেখা যায় ৭ ডিসেম্বর ২০১০ সালে নরওয়ের এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের দেওয়া একটি বিবৃতি সেখানে তুলে ধরা হয়েছে। সেই বিবৃতিতেও গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণে ট্রান্সফারের সমালোচনা করা হয়। এটাকে দুর্নীতিপ্রবণ কর্মকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই মেইলটিতেও প্রেরকের অংশটি সাদা রাখা হয়েছে।
হিলারির ম“ চেয়ে লেখা ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর একটি ই-মেইলে ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ১৬ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ সম্পর্কিত ওই বৈঠকে গ্রামীণ ব্যাংক ও আমার ইস্যু ‘বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়ে’ তোলা যায় কিনা দেখো।’
এই ই-মেইলে ইউনূস আরও লিখেছেন- ‘আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছিলাম। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতই আমাকে এ পরামর্শ দিয়েছিলেন যেন আমার সমস্যা নিয়ে আমি সরাসরি কথা বলতে পারি। ছয় সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনও প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কোনো সাড়া পাইনি।’
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দেওয়া ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’-এর ব্যাপারে এ ই-মেইলে ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিই আমাকে এই পদকের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এবং তার দল এ ব্যাপারে একটি শব্দও বলেনি।’ এ ই-মেইলের শেষে ড. ইউনূস লিখেছেন- ‘বুঝতেই পারছো, সমস্যাটি কত গভীর!’
একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর লেখা আরেকটি ই-মেইলে ইউনূস বলেছেন- কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে আমাকে নিয়ে ভয়ঙ্কর কথা বলেছেন। শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশ নিতে কয়েকদিনের মধ্যে নিউইয়র্কে যাচ্ছেন; সেক্রেটারি হিলারির সঙ্গেও তার দেখা হবে। দেখো আমার ব্যাপারে তার এ কঠোর অবস্থান দূর করার কোনো উপায় বের করা যায় কি না? তা না হলে ব্যাপারটি খুবই বিস্ফোরণের মতো ব্যাপার হবে। আমি তোমাকে শান্তি স্থাপনকারী (ইউনূস লিখেছেন পিস মেকার) হওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। শিগগির দেখা হবে।’
এ ই-মেইল চালাচালির অনেক পরে ২০১১ সালের ২ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক এক আদেশে নির্ধারিত বয়স ৬০ বছরের বেশি হওয়ার কারণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণ করে। ততদিনে ইউনূসের বয়স অবশ্য ৭০ হয়েছিল। এরপরও ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে কাজে লাগানোর নানা চেষ্টা করেন। ইউনূস অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের সবগুলো ধাপেই যান; তবে তার পক্ষে রায় যায়নি। সমালোচকরা বলেন, ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাজনৈতিক দল গড়ার ঘোষণা দিয়েই মূলত আওয়ামী লীগের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন ড. ইউনূস। এ কারণে শেখ হাসিনা তখন ‘ইউনূসকে সুদখোর’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত হিলারি ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার সময় ব্যক্তিগত কম্পিউটার সার্ভিসকে তিনি কি কি কাজে ব্যবহার করেছেন সে বিষয়ে তদন্তের অংশ হিসেবেই ই-মেইলগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য বলেছে, তার মধ্য থেকে দেড়শর মতো ই-মেইল পুরোপুরি প্রকাশ করা হয়নি। সেগুলোর কিছু কিছু অংশ কেটেছেঁটে বাদ দেওয়া হয়েছে। মিসেস ক্লিনটন অবশ্য বলছেন যে, এ সার্ভার ব্যবহার করে কোনো ধরনের গোপনীয় তথ্য তিনি কোথায়ও পাঠাননি এবং গ্রহণও করেননি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, নিউইয়র্কের বাড়িতে থেকে ব্যক্তিগত ই-মেইল সার্ভার ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। হিলারির বিরোধীরা বলছেন, অনিরাপদ কম্পিউটার সার্ভিস ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তিনি ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছিলেন।
এদিকে হিলারি ক্লিনটনের পাশাপাশি বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন। সূত্র:আমাদের সময়।
এনিয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের একটি ভিডিও প্রতিবেদনঃ