‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ নীতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের উপস্থিতিতে টানা তৃতীয় বারের মতো শপথ নিতে যাচ্ছে ‘মোদী সরকার’।
রোববার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওই শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতিমধ্যে দিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে আছেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণাএশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা হবে আট হাজার।
এদিকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে খাবার সামনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছবি শেয়ার করেছেন পুতুল।
ক্যাপশনে লিখেছেন, নরেন্দ্র মোদির শপথের আগে মায়ের সঙ্গে ‘কুইক বাইট’। ইতিমধ্যে ওই পোস্টে প্রায় সাড়ে তিন হাজার এনগেজমেন্ট দেখা গেছে।
ভারতীয় সময় সন্ধ্যা সাতটা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। একই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরাও শপথ নেবেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব বিদেশি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের অনেকেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং তারা রোববারের মধ্যে দিল্লিতে এসে পৌঁছাবেন।
বিদেশি অতিথিদের হোটেলে বিশেষ প্রোটোকলসহ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় রয়েছে লীলা, তাজ, আইটিসি মৌর্য, ক্ল্যারিজেস এবং ওবেরয়ের মতো নামি হোটেলগুলো।
অতিথিরা হোটেল থেকে অনুষ্ঠানস্থলে যাবেন নির্দিষ্ট পথে। এ সময় বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ এবং ডাইভারশন করা হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে আসবেন এমন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে রয়েছেন-
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু।
সিসিলিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আফিফ।
মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জুগনাথ।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার ডাহাল।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ছাড়াও এসব নেতা ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজে অংশ নেবেন। তখন তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
এদিকে কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহরুর পর প্রথম টানা তিন মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলা নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে জমকালো অনুষ্ঠানে যোগদানকারী বিশ্বনেতাদের জন্যও।
প্রেসিডেন্ট ভবনে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু মোদীকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দিল্লি পুলিশের সোয়াত ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনএসজি) কমান্ডোদের অনুষ্ঠানস্থল ও অন্য কৌশলগত অবস্থানের চারপাশে মোতায়েন করা হবে।
তাছাড়া শপথগ্রহণ উপলক্ষে পুলিশ দিল্লিকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করেছে। আগামী কয়েক দিনের জন্য এই শহরের ওপর দিয়ে কোনো ড্রোন, প্যারা গ্লাইডার, বিমান ও উষ্ণ বাতাসের বেলুনসহ আকাশে ওড়ে এমন যে কোনো যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদীকেই সমর্থন দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) নেতারা।
এর ফলে রোববার টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। আর এর মধ্য দিয়ে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি।