বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত প্রধান মতিউর রহমান নিজামীকে যে ফাঁসির রায় দিয়েছে তাতে সূত্র হিসেবে উঠে এসেছে দেশের বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিদের নাম।
এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সাবেক খতিব প্রয়াত মওলানা উবায়দুল হক, খেলাফত মজলিসের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক, ইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনী এবং মওলানা ইসহাক ওবায়দীর নাম।
একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা এবং ইসলাম নিয়ে এ সব ইসলামী চিন্তাবিদের বিভিন্ন লেখা ও সাক্ষাৎকার থেকে কিছু অংশ নিজামীর রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
রায়ে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় মওলানা উবায়দুল হকের এক সাক্ষাৎকারের একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। এতে উবায়দুল হক বলেন, ‘মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের কোন জিহাদ হতে পারে না। বরং এটা গুপ্ত হত্যা, মানবতাবিরোধী কাজ। ইসলাম মানবতাবিরোধী কাজ কখনও সমর্থন করে না।’
খেলাফত মজলিসের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের উদ্ধৃতি থেকে বলা হয়, ‘স্বার্থান্ধের পক্ষে সব কিছুই করা সম্ভব। শুধু দুনিয়ার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার হীন মানসে তারা ইসলামের মূল ভিত্তিকে কুঠারাঘাত করে নড়বড়ে করে দিয়েছে দ্বীনের সৌধকে। পরিতাপ এই জন্য যে, এক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে তারা ইসলামকেই। নিঃসন্দেহে তারা সীমালংঘনকারী, তারা বাতিল। শুধরে নেবার যোগ্যতা তারা হারিয়ে ফেলেছে। মিথ্যার বেসাতী করতে গিয়ে তারা সম্পূর্ণই অসত্যের উপর অবস্থান নিয়েছে। বাতিলের উপর জঘন্য দৃঢ়তা।’
ইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর একটি উদ্ধৃতি থেকে উল্লেখ করা হয়, ‘এটা ছিল জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের যুদ্ধ-ইসলামের বিরুদ্ধে নয়। যারা ‘৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধকে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলেছিল তারা ভুল বলেছিল। —–জামায়াতের বিরোধিতা মানে ইসলামের বিরোধিতা এটাও ঠিক নয়।’
মওলানা ইসহাক ওবায়দী বলেন, ‘৭১ সালে জামায়াত সবচেয়ে বড় ভুলটি করে বসে। স্বাধীনতা যুদ্ধকে তারা ইসলাম এবং কুফরের লড়াই হিসেবে উপস্থাপন করে। আমরা মনে করি রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেই কোন মুসলমানকে সে আওয়ামী লীগ বা কম্যুনিস্ট পার্টির লোকই হোক-কাফের ভাবা ঠিক নয়। ‘৭১ সালে জামায়াতের কিছু লোকের বিরুদ্ধে গণহত্যা ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে-ইসলামের দৃষ্টিতে এসব অবশ্যই নাজায়েয।’