বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে পবিত্রতার চাদরে ঢাকা চারটি মাস। আশ শাহরুল হারাম এ চারটি মাসের অন্যতম মহররম। ইসলামী বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনে মহররমকে প্রথম মাসের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এই পবিত্র মাসের ১০ তারিখ বা আশুরার দিনটি নানা দিক থেকে তাৎপর্যের দাবিদার। হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে অসংখ্য নবী-রসুলের স্মৃতি ধারণ করছে এ দিনটি। বিভিন্ন নবী-রসুলের শরিয়তে এ দিনটি বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে। হিজরি ৬১ সনের কারবালা প্রান্তরে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদতবরণ করলে মুসলমানদের কাছে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটি বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে ওঠে। সব নবী-রসুল আশুরার দিনটিকে ইবাদতের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি আশুরার দিন চার রাকাত নামাজ আদায় করবে, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস ১১বার পড়বে, আল্লাহ তার পঞ্চাশ বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং তার জন্য একটি নূরের মিম্বর তৈরি করবেন। ( নূযহাতুল মাজালিস ১৭৮/১)
আশুরার দিনের নফল রোজাকে রমজানের ফরজ রোজার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোজার মর্যাদা দেওয়া হয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার দিনে রোজা রাখতেন। মুমিনদের রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি আশুরার দিন চার রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং তাতে প্রতি রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ইখলাস পঞ্চাশ বার পড়বে, আল্লাহ তার বিগত পঞ্চাশ এবং আগত পঞ্চাশ বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। বেহেস্তে তার জন্য এক হাজার নূরের প্রাসাদ নির্মাণ করবেন।
হজরত শিবলী (র.) প্রথম থেকে দশম মহররম পর্যন্ত চার রাকাত নামাজ পড়তেন। প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ইখলাস ১৫ বার পড়তেন এবং সালামের পর এর ছাওয়াব ইমাম হোসাইন (রা.)-এর রুহে প্রেরণ করতেন। একদিন তিনি স্বপ্নে দেখেন, ইমাম হোসাইন (রা.) তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, জনাব! আমার অপরাধ কি? উত্তরে বলেন, অপরাধ নয়, আমার নেত্রদ্বয় তোমার অনুগ্রহে লজ্জিত। কিয়ামত দিবসে যতক্ষণ পর্যন্ত এর বিনিময় তোমাকে শোধ করতে পারব না ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার দিকে তাকাব না। (জাওয়াহেরে গায়বি)
মাওলানা আবদুর রশিদ
ইসলামী গবেষক