গ্রিড বিপর্যয়ের প্রায় আট ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ ফিরে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকায়, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু শনিবার রাত পৌনে ১০টায় বলেন, “জাতীয় গ্রিডে ১৫০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে এখন। আশা করছি, মধ্যরাতের মধ্যে রিকভারি হয়ে যাবে।”
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম-আল-বেরুনি রাত সাড়ে ১১টায় সাংবাদিকদের বলেন, “এখন ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। ৮০ ভাগ এলাকা বিদ্যুৎ পাচ্ছে। বাকিটুকুও রিকভার হয়ে যাবে শিগগিরই।”
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর প্রায় পুরো বাংলাদেশই বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। এর মেরামত কাজ চলার মধ্যেই বিকালে আবার গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দিলে সঙ্কট দীর্ঘায়িত হয়।
এদিন বিদ্যুতের ৬ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট চাহিদা ছিল বাংলাদেশে। মেরামতের পর বিকালে ৭০০ মেগাওয়াটের মতো সরবরাহ দেওয়া হচ্ছিল।
ওই সময়ই আবার বিপর্যয় দেখা দিলে সরবরাহ ২০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার হোসেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, দ্রুত সরবরাহ বাড়াতে গিয়ে পুনরায় সমস্যা দেখা দেয়। এখন ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে।
এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পাওয়ার খবর আসে।
রাত ৮টার দিকে ঢাকা শহরের বনানী, বাড্ডা, খিলক্ষেত, রামপুরা, মিরপুর, গাবতলীসহ কয়েকটি স্থানেও বিদ্যুতের দেখা মেলে।
রাত ১০টার মধ্যে আরও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ চলে আসে বলে ওই সব এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলায়ও বিদ্যুৎ আসার খবর পাওয়া যায়।
এসব এলাকায় মধ্যে কয়েকটিতে বিদ্যুৎ আসার পরপরই আবার চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘণ্টাখানেক বাদে আবার আসতেও দেখা যায়।
চট্টগ্রামের কাজীর দেউরী, আসকার দীঘির পাড়, ঘাট ফরহাদবেগ, আন্দরকিল্লা, জামাল খান এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুৎ এলেও সন্ধ্যা ৭টার দিকে আবার চলে যায়।
চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা বলছেন, যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে তা ‘রেশনিংয়ের’ মতো করে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
পিডিবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “নগরীর বিভিন্ন এলাকাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া শুরু হয়েছে।”
রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী স্বপন চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকাল ৫টার পর থেকে কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে চারটিতেই উৎপাদন শুরু হয়েছে।
এছাড়া সন্ধ্যার পর থেকে হাটহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু হয়। এছাড়া একই সময়ে দোহাজারী পাওয়ার প্ল্যান্টও চালুর পথে ছিল বলে জানান তিনি।
প্রকৌশলী স্বপন চক্রবর্তী বলেন, ধীরে ধীরে সবগুলো কেন্দ্র চালু এবং উৎপাদন বাড়লে বিদ্যুৎ পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হবে। খবর বিডিনিউজ২৪।