মীর কাসেম আলীর ফাঁসি

অভিযোগভিত্তিক দণ্ড ॥ চার্জ-১: খালাস, চার্জ-২: ২০ বছর কারাদণ্ড, চার্জ-৩: ৭ বছর কারাদণ্ড, চার্জ-৪: ৭ বছর কারাদণ্ড, চার্জ-৫: খালাস , চার্জ-৬: ৭ বছর কারাদণ্ড, চার্জ-৭: ৭ বছর কারাদণ্ড, চার্জ-৮: খালাস, চার্জ-৯: ৭ বছর কারাদণ্ড, চার্জ-১০: ৭ বছর কারাদণ্ড, চার্জ-১১: মৃত্যুদণ্ড (সর্ব-সম্মতিতে), চার্জ-১২: (মৃত্যুদণ্ড) (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে), চার্জ-১৩: খালাস, চার্জ-১৪: ১০ বছরের কারাদণ্ড।

---

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ ১১ ও ১২-এ মীর কাসেমের ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে মোট ১০টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। যে অভিযোগে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে সেটি হলো, (১১ নম্বর অভিযোগ) শহীদ জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়। এতে জসিমসহ পাঁচজন নিহত হন এবং পরে লাশ গুম করা হয়।

এ ছাড়া (১২ নম্বর অভিযোগ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ তিনজনকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। এতে দুজন নিহত হন এবং তাদের লাশ গুম করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অভিযোগে তাকে ৭২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, তার বিরুদ্ধে মোট ১৪টি অভিযোগের মধ্যে চারটি প্রমাণিত হয়নি।

এর আগে, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর মামলায় রায়ের জন্য রবিবার দিন ধার্য করা হয়েছে।

দীর্ঘ ছয় মাস অপেক্ষমাণ থাকার পর মামলাটি আজ রায়ের জন্য রাখা হলো। সর্বশেষ, গত ৪ মে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল।

ফাইল ফটো

মীর কাসেমের বিরুদ্ধে আনা ১৪ অভিযোগ

প্রথম অভিযোগ : মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী ১৯৭১ সালের ৮ নভেম্বর ওমরুল ইসলাম চৌধুরীকে চাকতাইঘাট থেকে অপহরণ করা হয়। এরপর তাকে কয়েক দফায় চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার ডালিম হোটেল, পাঁচলাইশ থানার সালমা মঞ্জিল এবং একটি চামড়ার গুদামে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগ : কাসেমের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৯ নভেম্বর চাকতাই থেকে লুৎফর রহমান ফারুককে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।

তৃতীয় অভিযোগ : ২২ অথবা ২৩ নভেম্বর মীর কাসেমের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে তার কদমতলা বাসা থেকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে নির্যাতন করা হয়।

চতুর্থ অভিযোগ : ডাবলমুরিং থানায় সাইফুদ্দিন খানকে তার নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে আলবদর বাহিনী কর্তৃক নির্যাতন।

পঞ্চম অভিযোগ : ২৫ নভেম্বর আনোয়ারা থানার আবদুল জব্বারকে তার নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে মীর কাসেম আলীর সামনে হাজির করা হয়। এরপর তাকে নির্যাতন করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ষষ্ঠ অভিযোগ : চট্টগ্রাম শহরের একটি চায়ের দোকান থেকে হারুনুর রশিদ নামে একজনকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেল এবং সালমা মঞ্জিলে নির্যাতন করা হয়।

সপ্তম অভিযোগ : মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে সাত/আটজন যুবক ডাবলমুরিং থানা থেকে সানাউল্লাহ চৌধুরীসহ দুজনকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে নির্যাতন করা হয়।

অষ্টম অভিযোগ : ২৯ নভেম্বর রাতে নুরুল কুদ্দুসসহ চারজনকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন।

নবম অভিযোগ : ২৯ নভেম্বর সৈয়দ মো. এমরানসহ ছয়জনকে অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়।

দশম অভিযোগ : কাসেমের নির্দেশে মো. যাকারিয়াসহ চারজনকে অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়।

একাদশতম অভিযোগ : শহীদ জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে অপহণের পর নির্যাতন করা হয়। এতে জসিমসহ পাঁচজন নিহত হন এবং পরে লাশ গুম করা হয়।

দ্বাদশতম অভিযোগ: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ তিনজনকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। এতে দুজন নিহত হন এবং তাদের লাশ গুম করা হয়।

ত্রয়োদশতম অভিযোগ : সুনীল কান্তিকে অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়।

চতুর্দশতম অভিযোগ : নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে নির্যাতন।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন মীর কাসেম আলী। সে সময়ে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ও চট্টগ্রাম শহর শাখার ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। পরে ১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বর পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক কার্যকরী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মীর কাসেম জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় ইসলামী ছাত্রসংঘের বাছাই করা সদস্যদের সমন্বয়ে সশস্ত্র আলবদর বাহিনী গঠন করেন। সেই আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম স্বাধীনতাবিরোধী মূল ধারার সঙ্গে একাত্ম হয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেন।’


শীর্ষ খবর বিভাগের আরো খবর...
সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে  হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ
ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম
গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ
জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি
নতুন সেনাপ্রধান হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নতুন সেনাপ্রধান হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান
প্রিন্স মামুনের রিমান্ড নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রিন্স মামুনের রিমান্ড নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

মীর কাসেম আলীর ফাঁসি
(সংবাদটি ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)
tweet