চিরকুমার রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের অবিবাহিত জীবনের অবসান হচ্ছে। তার গায়ে হলুদ ও বিয়ের দিন নির্ধারিত হয়েছে ৩১ অক্টোবর। আর বউভাত অনুষ্ঠিত হবে ১৪ নভেম্বর। এরইমধ্যে বৌভাতের কার্ড বিতরণ শুরু করেছে মন্ত্রীর পরিবার।বিয়ের কার্ডে বউভাতের তারিখ উল্লেখ করা হলেও বিয়ের তারিখ জানানো হয়নি। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, চলতি মাসের শেষ দিনে গায়ে হলুদ ও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
রেলমন্ত্রীর তিন ভাই মো. আবদুর রশিদ, মো. আব্দুল মতিন এবং এবিএম আবদুল লতিফের শুভেচ্ছাসহ বৌভাতের আমন্ত্রণ কার্ড ছাপানো হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমতে আসছে ১৪ই নভেম্বর ২০১৪ইং রোজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাত টায় আমাদের কনিষ্ঠ ভ্রাতা মো. মুজিবুল হক মুজিব-এর বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত বৌভাত অনুষ্ঠানে আপনার/আপনাদের উপস্থিতি ও দোয়া আন্তরিকভাবে কামনা করছি।’
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরের ২ নম্বর এলডি হলে বৌভাত অনুষ্ঠানের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রীতিভোজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সন্ধ্যা ৭টা।
বউ ভাতের কার্ডে বরের পরিচিতি- মো. মুজিবুল হক মুজিব, পিতা মরহুম রজ্জব আলী, মাতা মরহুমা সোনাবান বিবি, ঠিকানা- গ্রাম- বসুয়ারা, ডাকঘর- উত্তর পদুয়া, উপজেলা- চৌদ্দগ্রাম, জেলা কুমিল্লা এবং কনের পরিচিতি- হনুফা আক্তার রিক্তা, পিতা মরহুম হাবিব উল্লা মুন্সি, মাতা জোসনা বেগম, ঠিকানা- গ্রাম- মিরাখলা, ডাকঘর- গল্লাই, উপজেলা- চান্দিনা, জেলা- কুমিল্লা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ সিনিয়র রাজনীতিকদের কাছে দাওয়াতপত্র পৌঁছানো হয়েছে। দাওয়াত দেওয়া হবে সকল সংসদ সদস্যকেও। এছাড়া দাওয়াত পাবেন তার মন্ত্রণালয়েরসহ সংসদের প্রায় হাজার খানেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও।
তবে, একটি সূত্র জানায়, ২৯ অক্টোবর মন্ত্রীর বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর রেলমন্ত্রীর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বশুয়ারা গ্রামে আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
মন্ত্রীর বিয়ের আয়োজনে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ জালাল মজুমদারকে সমন্বয়ক করে ৬০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদ্যসরা বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে সাতষট্টি বছর বয়সী রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বিয়ে করছেন এমন খবর বের হওয়ার পর মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত হয়। প্রথমদিকে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে বিয়ের সম্ভাব্য সময় জানিয়েছিলেন মন্ত্রী নিজে।
গত সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বিয়ের প্রস্তুতিসহ কবে বিয়ে করতে যাচ্ছেন এবং কাকে কাকে দাওয়াত দিচ্ছেন তা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, বিয়ের তারিখ ডিসেম্বর থেকে এগিয়ে অক্টোবরে এসেছে।
বিয়ের খবরে ব্যাপক হাস্যরস হয় জাতীয় সংসদের ওই সময়ের চলা অধিবেশনেও।
এর আগে হবু বউ সম্পর্কে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ‘গ্রামের সহজ সরল সাধাসিধে মেয়ে, ধীরে ধীরে সব জানতে পারবেন। মাস্টার্স পাস করে আইনেও পড়েছেন, তো বয়স বুঝতেই পারছেন। পাত্রী পরহেজগার, বোরকা ছাড়া চলে না। ভাল পরিবারের মেয়ে। তার বাড়ি কুমিল্লায়। এর বেশি বলা যাবে না।’
কেন জীবনের পরন্ত বেলায় বিয়ের সিদ্ধান্ত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখলাম মানুষের জীবনের শেষ বয়সে একজন সঙ্গিনী দরকার, যাতে পরবর্তী জীবনে নিঃসঙ্গ না থাতে হয়।’
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের জন্ম ১৯৪৭ সালে। এ পর্যন্ত তিনবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তৃণমূল রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন তিনি।