বার্লিন প্রাচীরের পতন উপলক্ষে ডুডল বানাল গুগল। আজ ৯ নভেম্বর, জার্মানদের জন্য ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮৯ সালের এই দিনে বার্লিন প্রাচীরের পতন হয়। জার্মান আজ বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর পালন করছে।
আর এই দিনটিকে স্মরণ করে এবার ডুডল বানাল গুগল।
১৯৪৫ সালের ১২ মে শেষ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পরাজিত জার্মানিতে ঢুকে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের লাল ফৌজ এবং ইঙ্গ-মার্কিন ও ফরাসি শক্তিজোট।
জার্মানির পূর্বাংশে কবজা করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। পশ্চিমাংশ যায় ইঙ্গ-মার্কিন ও ফরাসি শক্তিজোটের দখলে। ১৯৪৯ সালের ১২ মে জন্ম নেয় পশ্চিম জার্মানি বা ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানি। ২৪ মে জন্ম নেয় পূর্ব জার্মানি বা জার্মান ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক। এরপর জার্মানির পাশাপাশি বার্লিন শহরকেও দু’ভাগে ভাগ করে নেয় কমিউনিস্ট ও পশ্চিমী শক্তিজোট।
যে বার্লিনকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম, এই দু’ভাগে করা হয়েছিল, ১৯৬১ সালের ১৩ অাগস্ট তা ভরাট করা হয় কংক্রিট দিয়ে। ঘোষণা করা হয়, সীমান্ত পেরিয়ে কেউ শহরের এদিক বা ওদিকে আর যেতে পারবে না। দেওয়াল টপকে কেউ যাতে পারাপার করতে না পারে, সে জন্য বসে
ওয়াচটাওয়ার।
একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমী জোট, অন্যদিকে কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন পাঁচিলের ধারে মোতায়েন করে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি। তবুও বিভিন্ন সময় পাঁচিল টপকাতে গিয়ে মারা যান ১৩৬ জন।
১৬১ কিলোমিটার লম্বা বার্লিন প্রাচীরের উচ্চতা ছিল ১৫ ফুট। মাঝে ছিল একটাই পারাপারের রাস্তা। চেক পয়েন্ট চার্লি নামে সেই সময়ে বিখ্যাত ছিল এই চৌকি।
বৃহৎ শক্তিবর্গের এই ভাগাভাগি নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ ছিল বার্লিন শহরের মানুষ। গত শতাব্দীর আটের দশকের শেষ দিকে যখন ক্রমশ ফাটল ধরছে কমিউনিস্ট বিশ্বে, তখন ধসে পড়ে বার্লিন প্রাচীর।
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয় প্রাচীরের পাশে। প্রথমে উত্তেজিত জনতা উঠে পড়ে প্রাচীরের ওপর। শাবল, হাতুড়ি নিয়ে জনতা ভেঙে দেয় দেওয়ালের একাংশ।
যে কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানিই মূলত প্রাচীর টিকিয়ে রাখতে জোর দিয়েছে এতদিন, তারা শান্তিপূর্ণ এই বিপ্লবকে মেনে নেয়। মেনে নেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনও উপায় ছিল না।
কিছুদিন বাদে কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির পতন ঘটে। ১৯৯০ সালে দুই জার্মানি মিলিত হয়। বার্লিন প্রাচীরের পতন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। ১৯৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটলে অমিত শক্তিধারী কমিউনিস্ট শিবিরও চুরমার হয়ে
যায়।
সূত্রঃ ওয়েবসাইট