প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা গণতন্ত্র বোঝে না, অযথা গণতন্ত্র প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে, নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করে, তারা অর্বাচীন।’
রোববার রাতে দশম সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য রাখার সময় এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। সিপিএ এবং আইপিইউর শীর্ষ পদে বাংলাদেশের দুই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় সংসদে এ ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হয়।
কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) এবং ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নে (আইপিইউ) বাংলাদেশের দুই সংসদ সদস্য শীর্ষ পদে নির্বাচিত হওয়াকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। নির্বাচন বানচাল করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্ত সংসদীয় গণতন্ত্র অক্ষুন্ন রাখতে আওয়ামী লীগের দৃঢ় সংকল্প ছিল। আমরা সফল হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কমনওয়েলথ দেশগুলোর প্রতি স্পিকারের এখন বড় দায়িত্ব পড়েছে। সরকার আপনার পাশে আছে। যারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন, বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা অর্বাচীন। গণতন্ত্র নিয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। বিশ্ব তাদের ভোট দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, গণতন্ত্র কী। বিশ্ব সম্প্রদায় গণতন্ত্রকেই বৈধতা দিয়েছে।’
‘এর আগে বাংলাদেশ তিন তিন বার সিপিএর সদস্য পদ হারিয়েছে। অথচ আজ আমরা সেই সিপিএর চেয়ারপারসন পেয়েছি। আমরা বিজয়ী জাতি। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। গণতন্ত্র না থাকলে আত্মবিশ্বাস থাকে না। পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে ২০২১ সালে আমরা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে চাই। এমনভাবে এই জয়ন্তী পালন করব যখন দেশ স্বনির্ভর হবে। দেশ হবে মধ্যম আয়ের,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মাত্র সাত দিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক বড় দুটি সংগঠনের শীর্ষ পদে সরাসরি ভোটে জয় লাভ করাকে বিরল ঘটনা অভিহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই বলেছেন, আমরা জিতবে পারব না। কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এ কারণে জয়লাভ করেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয়ের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রিকেট খেলাতেও আমরা নতুন উচ্চতায় উঠেছি। টাইগাররা পারে এটা প্রমাণিত হয়েছে। তিন তিনটি টেস্টে হারিয়েছি জিম্বাবুয়েকে। তামিম, সাকিব, মুমিনুলরা একের পর এক সেঞ্চুরি করেছে। এ বিজয় সারা দেশের মানুষের।’
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাবেই। বাংলাদেশ শুধু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই করেনি, সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবেই এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং সাবের হোসেন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এই দুই আন্তর্জাতিক সংসদীয় ফোরামের প্রতিনিধিকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য সব সংসদ সদস্যকেও ধন্যবাদ জানান।
পরে স্পিকার ধন্যবাদ প্রস্তাবটি ভোটে দেন। কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটি পাশ হয়।