বর্তমানে ছাত্র রাজনীতিতে আদর্শের অনুপস্থিতি দেখে নিজের বেদনার কথা তুলে ধরলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, অতীত ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে ছাত্রদের গণমুখী রাজনীতির ধারায় ফিরতে বললেন তিনি।
দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষায়তন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তনে এসে মঙ্গলবার আচার্য হামিদের এই আহ্বান। ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসা আবদুল হামিদ বাঙালির সেই সংগ্রামের অধ্যায়ে ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল ভূমিকার কথা আজকের স্নাতকদের মনে করিয়ে দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আজও তিনি ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে নন, কেননা নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন রয়েছে বলেই তার বিশ্বাস। তবে তা হতে হবে আদর্শিক, জনকল্যাণমুখী। ষাটের দশকে আমরা যারা ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম তাদের সকলেরই আদর্শ ছিল। সে আদর্শ হলো দেশ ও জনগণের কল্যাণ সাধন। সেখানে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থের কোনো স্থান ছিল না। বর্তমানে ছাত্র রাজনীতিতে অনেক ক্ষেত্রে সে আদর্শের অনুপস্থিতি আমাকে বেদনাহত করে, বলেন তিনি।
জাতীয় সংসদে সাতবার কিশোরগঞ্জের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা এবং পরে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করা হামিদের পর্যবেক্ষণ, দেশের ছাত্র রাজনীতি এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে আদর্শের পরিবর্তে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এ থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্র রাজনীতিকে জাতির বৃহত্তর কল্যাণে আদর্শিক ও গণমুখী করে তুলতে আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাই। এ সমাবর্তনে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় হাজার ১০৪ জন শিক্ষার্থীর হাতে ডিগ্রি তুলে দেওয়া হয়। কৃত্বিতের জন্য ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় স্বর্ণপদক।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জন্ম দিয়েছে অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদের। তারা মহান স্বাধীনতাসহ জাতীয় উন্নয়নে বিপুল অবদান রেখেছেন। মূলত ছাত্র রাজনীতির পথ বেয়েই তাদের উত্থান ঘটেছে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ছাত্র রাজনীতির রয়েছে এক বিশাল সংযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে এ অনুষ্ঠানে এবারের সমাবর্তন বক্তা ছিলেন জেনেভাভিত্তিক মেধাসত্ত্ব সংগঠন ওয়ার্ল্ড ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক ফ্রান্সিস গ্যারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ তার হাতে তুলে দেন সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমেদও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।