বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধের মধ্যে রংপুরের মিঠাপুকুরে যাত্রীবাহী বাসে আগুনে এক শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আগুনে দগ্ধ আরো কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে আগুন দিলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে মিঠাপুকুর থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান।
রংপুরের পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিশ ও বিজিবি প্রহরায় ঢাকাগামী বাসটি বাতাসন এলাকায় যাত্রী উঠানোর জন্য থামলে পাশের বাঁশঝাড়ে ওঁতপেতে থাকা জামায়াত শিবিরের কর্মীরা গাড়িটিতে পরপর কয়েকটি পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে পুরো গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। এসময় শিশুসহ ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে ১০জন গুরুত্বর অগ্নিদগ্ধ হন।
তবে হতাহতদের পরিচয় তখনও জানাতে পারেননি তিনি।
মারাত্মক দগ্ধদের রংপুর মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
সকালে দগ্ধ এক সেনা সদস্যের স্ত্রীকে রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয় বলে জানান রংপুর মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. মারুফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বর্তমানে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন পাঁচজনের মধ্যে এক বৃদ্ধার শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। অন্য দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
নিহতদের লাশ রংপুর মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে মিঠাপুকুর উপজেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ। তবে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে যান চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
এই ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকেই দুইজনকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও ৬ জনকে আটক করা হয়।
মিঠাপুকুরের ওই এলাকায় জামায়াত ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের শক্ত অবস্থান রয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।এর আগে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণার পর মিঠাপুকুরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় জামায়াত কর্মীরা।
সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে সাতজন নিহত হন।