প্রাণঘাতী ভাইরাস ইবোলার সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশে আসা বিমানযাত্রীদের প্রত্যেককে আগের এক মাসের ভ্রমণের তথ্য জানাতে হবে।
বৃহস্পতিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হছে। বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ছিলেন।
ইবোলা সংক্রমণে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষজ্ঞ দলের ঢাকা বিমানবন্দরে প্রস্তুতি দেখে যাওয়ার একদিনের মধ্যে এই বৈঠক হল।
বৈঠকে অংশ নেওয়া আইইডিসিআর’র পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিমান যাত্রীদের ‘অ্যারাইভাল কার্ড’-এ আরেকটি তথ্য নেবে।
“এতে একজন বিমানযাত্রী গত এক মাসে কোথায় কোথায় ভ্রমণ করেছেন সে তথ্য লিখতে হবে।”
যাত্রীরা যেন এই তথ্য লিখতে ভুল না করেন, সেজন্য অবতরণের আগে ঘোষণা দেওয়ার জন্য সব এয়ারলাইন্সকে বলা হবে বলে জানান আইইডিসিআর পরিচালক।
লাইবেরিয়া থেকে সম্প্রতি আসা কয়েকজন বিমানবন্দরে কোনও ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই বেরিয়ে গেছে বলে অভিযোগ ওঠার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
তবে লাইবেরিয়া ফেরত ওই ছয় বাংলাদেশির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আফ্রিকার দেশটির সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় তারা অন্য যে বিমানবন্দর হয়ে এসেছেন সেখানে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। তারা সুস্থ অবস্থাতেই দেশে ফিরেছেন।
বৈঠকে বিমানবন্দরের জন্য ‘থার্মাল স্ক্যানার’ কেনার সিদ্ধান্তও হয়েছে। আর্চ ওয়ের পাশাপাশি এই স্ক্যানারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। ইবোলা আক্রান্তের প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর।
গত মার্চ থেকে ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে ৪ হাজার ৪৪৭ জন মারা গেছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে। তাদের অধিকাংশই মারা গেছেন পশ্চিম আফ্রিকায়।
পশ্চিম আফ্রিকার ইবোলা আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়া ও গিনি। গত বছর ডিসেম্বরে ইবোলা সংক্রমণ শুরু হলেও মার্চে তা চিকিৎসকদের নজরে আসে।
তবে এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ডালাস হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় স্বাস্থ্যকর্মী নিনা পাহমের দেহে ইবোলার ভাইরাস ধরা পড়ে। তিনি লাইবেরীয় নাগরিক থমাস ডানক্যানের চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন।