হরতালের কারণে সময়সূচি পরিবর্তন করে চলমান এসএসসি (মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট) পরীক্ষা সপ্তাহে দুদিন- শুক্র ও শনিবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রবিবার ধর্ম মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানসিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার পর সময় পরিবর্তন হলে একটু ধাক্কা লাগে, অনিশ্চয়তার মধ্যে চলে যায়। তাই আবারও যখন হরতাল দিলো তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীকে বলে দিয়েছি- কোন কোন দিন পরীক্ষা আছে, সপ্তাহে দুটা পরীক্ষা করে আগেভাগেই পরিবর্তন করে দেন। অন্ততপক্ষে তারা যেন ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারে।
তবে বিএনপি-জামায়াত শুক্র-শনিবারও হরতাল ডাকতে পারে এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এ সপ্তাহে দুটি পরীক্ষা ছিলো- আমরা তা শুক্রবার ও শনিবার করে দিয়েছি। জামায়াত-বিএনপি ধর্মের নামে ব্যবসা করে বেড়ায়, এদের তো কোনও বিশ্বাস নেই। হয়তো দেখা গেলো শুক্রবারেও আবার হরতাল দিয়ে দেবে কিনা কে জানে। যাইহোক আমরা এটুকুই চাই, আল্লাহ এদের সুমতি দিক।
তিনি বলেন, ছোট্ট শিশুদেরও আগুনে পুড়িয়ে মারছে। আমাদের পরীক্ষার্থী শিশুদের তো এতো ঝুঁকির মধ্যে পাঠাতে পারি না। কাজেই আমরা সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে আবার নতুন রুটিন করে দিচ্ছি।
পরীক্ষার মধ্যে হরতাল অবরোধের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জানি না বিএনপি নেত্রীর কি উদ্দেশ্য। মানুষ লেখাপড়া করুক, মানুষের মতো মানুষ হোক, উচ্চশিক্ষিত হোক এটা বোধ হয় উনি চান না। শিবির আর জামায়াতও আবার হরতাল ডাকে। লেখাপড়া শিখলে মানুষের সচেতনতা বাড়বে। তারা যে মানুষকে বিভ্রান্ত করে সে বিভ্রান্তির হাত থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। সে জন্যই তারা এদেশের মানুষকে শিক্ষিত হতে দিতে চায় না। এটাই বোধ হয় তাদের উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, আমরা ১ জানুয়ারি বই দিচ্ছি। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা। এরপর মার্চ মাসে যেয়ে এইচএসসি পরীক্ষা। অর্থাৎ সবকিছু যখন আমরা নিয়মের মধ্যে নিয়ে এসেছি। কি দুর্ভাগ্য আমাদের, সে সময় হঠাৎ হরতাল অবরোধ। পুরো মাস অবরোধ আছেই। আবার অবরোধের মধ্যে হরতাল। মরার ওপর খাড়ার ঘা যাকে বলে।
খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা তো মানুষ না, এরা তো উন্মাদ হয়ে গেছে। আমার তো মনে হয় বিএনপি নেত্রী বোধ হয় উন্মাদই হয়ে গেছেন। নইলে বাড়িঘর ছেড়ে দিয়ে তিনি অফিসে বসে কোন বিপ্লব ঘটাচ্ছেন সেটা আমার বোধগম্য না। কিন্তু মানুষ খুন করছেন এটাতো সবা্ই দেখতে পাচ্ছেন।
ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা মানুষ। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।
ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোনও শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ হয় না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা নীতিমালায় ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার কথা তুলে ধরেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সচিব চৌধুরী মোহাম্মদ বাবুল হাসানসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।