এবারের মেলা থেকে ব্যবসায়ীরা ৯৫ কোটি টাকার পণ্যের তাৎক্ষণিক রপ্তানির আদেশ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মঙ্গলবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা- ২০১৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এতথ্য জানান তিনি।
গতবারের তুলনায় এবছরের ১৫ কোটি টাকা বেশি স্পট অর্ডার এসেছে। ২০১৪ সালে বাণিজ্যমেলা থেকে ৮০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার স্পট অর্ডার পেয়েছিলেন রপ্তানিকারকরা। তবে তার আগের বছর ১৫৭ কোটি টাকার স্পট অর্ডার ছিল।
টানা অবরোধ-হরতাল না থাকলে এই রপ্তানি আদেশ আরও বাড়তো বলে মন্তব্য করেন তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন, “১ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন হলো। আর ৫ জানুয়ারি বিএনপি বা ২০ দল যা-ই বলেন অবরোধ-হরতাল দিয়ে অরাজকতা, বিশৃংখলা, পেট্রোল বোমা মারা শুরু করলো। এই সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদি তৎপরতা না থাকলে বাণিজ্য মেলা থেকে আরও বেশি রপ্তানি আদেশ পাওয়া যেতো। এ ধরনের অরাজকতা চলায় দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে আমি মেলা ১০ দিন বাড়াই। আমি অত্যন্ত খুশি যে মেলা সুন্দরভাবে সমাপ্ত হচ্ছে।”
মঙ্গলবার মেলার শেষে সারাদিনই ক্রেতাদের ব্যাপক সমাগম দেখা গেছে। প্রবেশ পথ, ভেতরের রাস্তা, প্যাভিলিয়ন, স্টল সব জায়গাই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়। বিক্রেতারাও বিভিন্ন ধরনের ছাড় দিয়ে হাকডাক করে বেচাকেনা করেছে।
মেলার ভেতরেই হকাররা কেনা বেচা করেছেন। বাদাম বিক্রেতা, খেলনা, বিভিন্ন জামা কাপড় বিক্রেতারা তাদের পণ্য নিয়ে বসে গেছেন রাস্তায়, চলছে হাঁকডাক। ক্রেতারাও এসব হকারদের কাছে ভিড় করেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিষ বসুর সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম চৌধুরী, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
গত বছর মেলা থেকে সরকার প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ভ্যাট আদায় হয়েছিল। এবারও সমপরিমাণ ভ্যাট আদায় হবে বলে আশা করছেন ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান।
এবারের মেলায় নান্দনিকতা ও স্থাপত্য শৈলী বিবেচনায় ১০টি ক্যাটাগরিতে মেলায় অংশগ্রহণকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
এগুলো হলো- প্রিমিয়াম ক্যাটাগরিতে হাতিল কমপ্লেক্স লিমিটেড, আকতার ফার্নিচার, ওয়ালটন, আবুল খায়ের মিল্ক প্রোডাক্ট, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে হাতিল কমপ্লেক্স, বিল্ড ট্রেড, কারুপণ্য রংপুর লিমিটেড, সাধারণ সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রোমোশন সেন্টার, প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে বিআরবি কেবলস, ওরিয়ন ফুটওয়্যার লিমিটেড, ম্যাটাডোর বলপেন, ওকে মোবাইল লিমিটেড, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, প্রিমিয়াম স্টল ক্যাটাগরিতে আলী ন্যাচারাল অয়েল, প্রিন্স ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড, হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং সাধারণ স্টল ক্যাটাগরিতে মেসার্স এস এম কুষ্টিয়া হস্তশিল্প, মা এন্টারপ্রাইজ ও এ ওয়ান ইন্টারন্যাশনাল।
এছাড়া বিশেষ ক্যাটাগরিতে মডার্ন হারবাল, প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন জয়িতা, সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়ালটন, সিঙ্গার বাংলাদেশ ও র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডকে পুরস্কৃত করেছে আয়োজক সংস্থা ইপিবি।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি প্যাভিলিয়ন স্থাপনের জন্য ইপিবিকে বিশেষ সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়েছে।