সরকারি হিসাবে গত দুই দশকে নৌপথে ৩৮৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর বেসরকারি হিসাবে ঘটেছে ৬৫৮টি। সরকারি তথ্য বলছে, এই সময়ে মারা গেছেন দুই হাজার ৯০০ জন, নিখোঁজ আছেন ৬০০ জন। অন্যদিকে বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী, একই সময়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ মারা গেছেন, নিখোঁজ আছেন দেড় হাজার। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওয়েবসাইটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই এবং ঝড়ো হাওয়ার মতো প্রতিকূল পরিবেশকে লঞ্চডুবির কারণ বলে বিবেচিত করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে পণ্যবাহী কার্গো জাহাজের কারণে। আজ রোববার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার দুর্ঘটনাটির কারণও তাই।
পাটুরিয়ার থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যাওয়ার পথে সারবোঝাই কার্গো ‘এমভি নারগিস’-এর ধাক্কায় পদ্মা নদীতে ডুবে যায় ‘এমভি মোস্তফা’। এ দুর্ঘটনার পর রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত ৪৮ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। এখনো অনেকে নিখোঁজ আছেন। লঞ্চটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এর আগে ২০১২ সালের ১২ মার্চ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় মেঘনা নদীতে ডুবে যায় ‘এমভি শরীয়তপুর-১’। যাত্রীবাহী এ লঞ্চটি শরীয়তপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছিল।
২০১১ সালের ২১ এপ্রিল মেঘনা নদীতে একটি নিমজ্জিত কার্গো জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় ‘এমভি বিপাশা’। যাত্রীবাহী লঞ্চটি ভৈরব থেকে সুনামগঞ্জের সাচনা যাচ্ছিল। এ দুর্ঘটনায় ৩৩ জন মারা যায়।
বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে পণ্যভারে নিমজ্জিত কার্গো জাহাজকে নৌ চলাচলের জন্য ঝুঁকি বলে মন্তব্য করেছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। গত বছর মে মাসে শাজাহান খান বলেছিলেন, বালুবাহী জাহাজের ৯০ শতাংশ পানিতে তলিয়ে থাকে, এমনকি বাতিও থাকে না। তাই নদীতে কোনো যান আছে কিনা তা বোঝা যায় না।
আজকের ‘এমভি মোস্তফা’র দুর্ঘটনার ব্যাপারে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান মন্তব্য করেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। চালকরা সতর্ক থাকলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’