খালেদার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গুলশান থানায়

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি পাঠানো হয়েছে গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট ও রমনা থানায়। এরই মধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি গুলশান থানায় এসে পৌঁছেছে।

খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি পৌঁছেছে গুলশান থানায় - ফাইল ছবিবকশীবাজার অবস্থিত বিশেষ জজ আদালত-৩ এর পেশকার আরিফ হোসেন বুধবার বিকেল সোয়া চারটায় এ পরোয়ানা গুলশান থানায় পৌঁছে দেন বলে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, বুধবার দুপুর ২টায় আরিফ হোসেন খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি নিয়ে গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট ও রমনা থানার উদ্দেশে রওয়ানা হন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাজির না হওয়ায় বুধবার সকালে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বিশেষ জজ আদালত।

ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদ্দার বুধবার সকালে আদেশ জারি করেন।

সকালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার চেয়ে পরবর্তীতে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী। তবে শুনানির পর এ আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত এবং এ মামলার সাক্ষ গ্রহন ৪ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করে। একই সাথে আগামি ৪ মার্চ এ মামলার অপর আসামি তারেক রহমানকেও হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর মধ্য দিয়ে সকালে দেওয়া খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল থাকল বলে জানায় বাদি পক্ষের আইনজীবী।

এদিকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, “আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।”

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ ৯ জনের আদালতে হাজির হওয়ার দিন ছিল বুধবার। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সময়ের আবেদন করেন।

এ আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বেগম খালেদা জিয়া হরতাল-অবরোধে নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে হাজির হতে পারেননি। এ ছাড়া বিচারক বদলি চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রাখার আবেদন করা হয়।

আদালত দু’পক্ষের শুনানির পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের করা ‘সময় আবেদন’ বাতিল করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

খালেদা জিয়া ছাড়াও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে দুদকের আইনজীবী মশাররফ হোসেন কাজল বলেন, “খালেদা জিয়া আদালতেও আসেন না, তার পক্ষে কেউ কথাও বলেন না। আদালত তার রুটিন ওয়ার্ক করেছেন।”

তিনি আর বলে, ‘৫৪০/এ এর বিধান মোতাবেক কোন আইনজীবী এই দুর্নীতির মামলার দায়িত্ব না নেওয়ায় আদালত আজ এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।’

এ বিষয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলে, “আদালতের নির্দেশনা ন্যায় বিচার পরিপন্থি। নিরাপত্তাজনিত কারনে আদালতে হাজির হতে পারেননি বেগম খালেদা জিয়া।”

তিনি আরও জানান, ‘উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।’

আদেশ জারির পর এক তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “আদালতের এ রায় রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা ন্যায়বিচার পায়নি। এ আদালতের ওপর আস্থা নেই বলে আমরা হাইকোর্টে আপিল করেছি।”

পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে এ মামলার পরবর্তী কার্যক্রম ঠিক করা হবে।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করা যাবে কিনা সে ব্যাপারেও সন্দেহ প্রকাশ করেন এই আইনজীবী।

চলতি বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুবেদ রায়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ মামলার অপর আসামীরা হলেন-খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

অপরদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামীরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।


প্রধান সংবাদ বিভাগের আরো খবর...
সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে  হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ
ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম
গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কোরবানির সুস্থ পশু চেনার উপায়, অসুস্থ গরু থেকে সাবধান কোরবানির সুস্থ পশু চেনার উপায়, অসুস্থ গরু থেকে সাবধান
এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ
জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি

খালেদার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গুলশান থানায়
(সংবাদটি ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)
tweet