রানের ব্যবধানে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়টা তুলে নিল অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ দলীয় রানের ইনিংস গড়ার পর বোলারদের দাপটে আফগানিস্তানকে রেকর্ড ২৭৫ রানে হারিয়েছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
বিশ্বকাপে রানের দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় ছিল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০০৭ সালে ভারত বারমুডাকে এবং এবারের আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৭ রানে হারায়।
আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ১ উইকেটে হারা অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্নারের শতক আর স্টিভেন স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েলের অর্ধশতকে ৬ উইকেটে ৪১৭ রান করে । ২০০৭ এর আসরে বারমুডার বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৪১৩ রান করে আগের রেকর্ড গড়েছিল ভারত।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যের ধারে কাছে যেতে পারেনি আফগানিস্তান। ৩৭ ওভার ৩ বলে ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ায় বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা এড়াতে পারেনি তারা।
এই জয় আবার ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ। তাদের আগের সবচেয়ে বড় জয় ছিল ২৫৬ রানের; ২০০৩ সালে নামিবিয়ার বিপক্ষে।
বুধবার পার্থের ওয়াকায় বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কোনো বড় কোনো জুটি গড়তে পারেনি আফগানিস্তান।
সর্বোচ্চ ৪৮ রানের জুটি গড়েন সামিউল্লাহ সেনওয়ারি ও নওরোজ মঙ্গল। ৯৪ রানে এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ে বড় জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
সামিউল্লাহ, মঙ্গল ও মোহাম্মদ নবির দ্রুত বিদায়ের দলকে দেড়শ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান নাজিবুল্লাহ জাদরান। ২টি করে চার ও ছক্কার সাহায্যে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন মঙ্গল।
সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে নাজিবুল্লাহর বিদায়ের পর আর বেশিদূর এগোয়নি আফগানদের ইনিংস।
শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি পার্থে টসে হেরে ব্যাট করতে আসা অস্ট্রেলিয়ার। শুরুতে দৌলত জাদরানের বলে নওরোজ মঙ্গলের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন অ্যারন ফিঞ্চ।তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারানোর কোনো প্রভাব পড়তে দেননি ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ। দ্বিতীয় উইকেটে তাদের রেকর্ড জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পায় অস্ট্রেলিয়া।
ক্যারিয়ার সেরা ১৭৮ রানের ইনিংস খেলে ওয়ার্নারের বিদায়ে ভাঙে ৩৪.৩ ওভার স্থায়ী জুটি। ওয়ার্নারের আগের সেরা ছিল ১৬৩ রান। চতুর্থ শতক পাওয়া এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ১৩৩ বলের ইনিংসটি গড়া ১৯টি চার ও ৫টি ছক্কায়।
ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছিলেন রিকি পন্টিং ও শেন ওয়াটসন। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অবিচ্ছিন্ন ২৫২ রানের জুটি গড়েছিলেন এই দুই জনে।
ওয়ার্নারের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন ম্যাক্সওয়েল। স্মিথের সঙ্গে ৬৫ ও জেমস ফকনারের সঙ্গে ৪৩ রানের দুটি জুটি উপহার দেন তিনি। শেন ওয়াটসনের বদলে দলে ফেরা ফকনার করেন মাত্র ৭ রান।
মাত্র ৫ রানের জন্য শতক পাননি স্মিথ। ৯৫ রান করা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ৯৮ বলের ইনিংসটি সাজানো ৮টি চার ও ১টি ছক্কায়।
ঝড়ো ব্যাটিং করা ম্যাক্সওয়েল ফিরেন ৮৮ রান করে। তার ৩৯ বলের ইনিংসটি ৭টি ছক্কা ও ৬টি চার সমৃদ্ধ।
আফগানিস্তানের শাপুর জাদরান ও দৌলত দুটি করে উইকেট নেন।
অস্ট্রেলিয়া দল : মাইকেল ক্লার্ক (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ, স্টিভেন স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল, মার্শ, হাডিন, ফকনার, জনসন, স্টার্ক ও হাজলেউড।আফগানিস্তান দল : মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), জাভেদ আহমেদী, উজমান গনি, নওরোজ মঙ্গল, আজগর স্টানিকজাই, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি, নাজিবুল্লাহ জাদরান, আফসার জাজাই, দৌলত জাদরান, হামিদ হাসান ও শাহপুর জাদরান।