আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে মনোনয়নপত্র তুলেও নির্বাচন করছেন না নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক কারাবন্দী মাহমুদুর রহমান মান্না। নাগরিক ঐক্যের সদস্য আতিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রবিবার তিনি বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কারাবন্দী মান্নার স্বাক্ষর সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতির প্রতিবন্ধকতা দূর করা আমাদের সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও অন্যান্য সহযোগিতার অভাব এবং তার শারীরিক সমস্যা প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে ডিসিসি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা তার সুচিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আবু বকর সিদ্দিকী। সভায় অন্যান্য বিষয় ছাড়াও ডিসিসি নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়।
সভায় বলা হয়, ‘মাহমুদুর রহমান মান্না গতবার ডিসিসি নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে বিপুল জনসমর্থন পেয়েছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত সে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এবারে ডিসিসি নির্বাচনে তিনি উত্তরের মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগেই তাকে গ্রেফতার করায় সন্দেহ জাগাই স্বাভাবিক। নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই যেভাবে দিন তারিখ ঘোষণা করেছেন এবং যে সব বিধিবিধান হাজির করেছে তা ডিসিসি নির্বাচনকে প্রহসনের পথে ঠেলে দিয়েছে। মেয়র পদে এক লাখ টাকার জামানত, নতুন ব্যাংক হিসাব খোলা, টিন নাম্বারসহ মনোনয়নপত্র পূরণে আরও যে সব নিয়ম-কানুন করা হয়েছে তা অগ্রহণযোগ্য। তার পরও আমরা মনোনয়নপত্র তুলে কারাবন্দী অবস্থায় মান্নার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করতে চেয়েছি। এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে সব বাধা অতিক্রম করা এবং তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।’
সভায় আরও বলা হয়, ‘আমরা শুরু থেকেই নির্বাচন উপলক্ষে সব প্রার্থীর জন্য একই রকম সুযোগ বা সমতল মাঠ নিশ্চিত করা এবং অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধের দাবি করে আসছিলাম। সে দাবি পূরণের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এ নির্বাচনকে একতরফা করার অপচেষ্টাও লক্ষণীয়। নির্বাচন কমিশনের মেরুহীন ভূমিকা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনমূলক ও নিপীড়নকারী ভূমিকা আমাদের হতাশ করেছে। এ ছাড়া মাহমুদুর রহমান মান্নার শারীরিক অবস্থাও শঙ্কাজনক। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও মান্নার জীবন নিয়ে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তার জীবন রক্ষার্থে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে অবহেলার পাশাপাশি প্রয়োজনে তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিও করা হয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত আমরা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছি।’