অশঙ্কাই সত্যি প্রমাণ হলো। বিশ্বকাপ ফাইনালের কোথাও দেখা গেল না আইসিসি প্রেসিডেন্ট আ হ ম মোস্তফা কামালকে। মেলবোর্নে রোববারের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের পর প্রচলিত রীতি ভেঙ্গে বিজয়ী দলের অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সাবেক সভাপতি ও আইসিসি চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।
অথচ চলে আসা ধারা অনুযায়ী আইসিসির প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী দলের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে দেয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী মোস্তফা কামালের। কিন্তু এবার সেই প্রথা ভেঙে ফেলা হলো।
ট্রফি বিতরণী অনুষ্ঠান মঞ্চেও দেখা যায়নি আইসিসি প্রেসিডেন্টকে। সত্য কথা বলায় এমনটা হয়েছে জানিয়ে খেলা শেষে তাৎক্ষনিক এক প্রতিক্রিয়ায় মেলবোর্নে অবস্থানরত ক্ষুব্ধ মোস্তফা কামাল বলেন, “দেশে ফিরে লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টের সাথে কথা বলে দেখব আইসিসি’র এধরনের গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।”
তিনি বলেন, “এটা তাদের (আইসিসি’র) দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ। আমার সর্বশেষ মন্তব্যকে তারা অজুহাত হিসেবে কাজে লাগিয়েছে মাত্র।”
আইসিসির চেয়ারম্যান ও ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সাবেক সভাপতি নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ইচ্ছায় নাকি এমন ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। আনন্দবাজার পত্রিকার খবর।
কিন্তু হঠাৎ করে কেন প্রচলিত রীতি ভাঙছে আইসিসি? কেন অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন আইসিসি প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল। তার পেছনে নাকি ওই ‘তিন মোড়লেরই চক্রান্তের হাত’।
চলতি বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে আম্পায়ারিং নিয়ে রোষ উগরে দেয়ায় আইসিসিতে নাকি এখন চাপের মুখে বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী! অন্তত আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে তেমনটি দাবি করা হচ্ছে।
মোস্তফা কামালের সাথে কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় বোর্ডের সাবেক প্রধান এন শ্রীনিবাসন নাকি আইসিসি প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, “ম্যাচের ফল আগেই ঠিক করা ছিল- জাতীয় যেসব কথা আপনি বলেছেন, তারপর আর এই প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ পুরস্কার আপনার হাত থেকে দেয়া শোভা পায় না।”
ইতিহাস বলে, আইসিসি প্রেসিডেন্ট সাধারনত বিশ্বকাপ জয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন। একজন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে ট্রফি দিয়েছিলেন বেনজির ভুট্টো। তাছাড়া ১৯৯২ সালে যেমন ইমরান খানের হাতে ট্রফি তুলে দেন তখনকার আইসিসি প্রেসিডেন্ট কলিন কাউড্রি। গতবার (২০১১) ধোনির হাতে কাপ তুলে দেন শারদ পওয়ার। ১৯৯৯ সালে জগমোহন ডালমিয়া। এই পরম্পরা মেনে রোববার জয়ী দলের হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিবেন আইসিসি প্রেসিডেন্ট এটাই স্বাভাবিক।
আইসিসির নতুন গঠনতন্ত্রে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। যাবতীয় সিদ্ধান্ত আইসিসি চেয়ারম্যানই নিয়ে থাকেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদ অলঙ্কারিক হলেও আভিজাত্যের নিরিখে শীর্ষে। বিশ্বকাপ হাতে তুলে দেওয়াটা তাঁরই অধিকার। চেয়ারম্যানের নয়।