১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরুর দিনটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনে সরকার আশাবাদী বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন ‘আমরা যদি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারি তাহলে ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাব।’
সারা বিশ্বে ৯ আগস্ট গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হলেও সেটি পাল্টে ২৫ মার্চ করতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য জাতিসংঘে দেন দরবার করছে বাংলাদেশ।
বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চ লাইট শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘মানুষ নয়, জমি চাই’ এই নীতিতে পরবর্তী নয় মাসে চলা যুদ্ধে হত্যা করা হয় অন্তত ৩০ লাখ মানুষকে। ধর্ষিত হয় সাড়ে তিন লাখেরও বেশি নারী।
গণহত্যা শুরুর এই দিনটিতে শহীদদের স্মরণে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের।
২০১৭ সাল থেকে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে বাংলাদেশে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো পালিত হবে দিবসটি। আর রাত নয়টার সময় এক মিনিট বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে ‘ব্ল্যাক আউট’ পালনের ঘোষণা এসেছে।
বাংলাদেশে চালানো পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা অন্য যেকোনো দিনের গণহত্যার চেয়ে অনেক বেশি রক্তক্ষয়ী ও জঘন্য। ফলে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। আর এই স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টায় ওই বছরের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
শুক্রবার রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বর্ধিত সভায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রুয়ান্ডা গণহত্যার তুলনায় ২৫ মার্চের গণহত্যা কম হয়নি। কাজেই এই দিনটিই আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন যুক্তিযুক্ত।
‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির দাবিতে ২৫ মার্চ রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত দাঁড়িয়ে লাইট বন্ধ করে সারাদেশের মানুষ একসঙ্গে নীরবতা পালন করবে।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সঠিকভাবে উপস্থাপনের কারণেই পয়লা বৈশাখ, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের দেশে পাকিস্তানি বাহিনী যে বর্বরতম হত্যা চালিয়েছে তা যদি তুলে ধরতে পারি তাহলে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাব।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ ধরে কামরুল বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী বলে থাকেন যে, স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ লোক হত্যা করা হয়েছে এ তথ্যটি সঠিক নয়। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কথা বলে, তাদের পৃষ্টপোষকতা করে প্রকারান্তরে স্বাধীনতার বিপক্ষেই কথা বলেন।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।