বর্ণিল আতশবাজি, লেজার শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতিপত্র পাওয়ার আনন্দ উদযাপন হলো।
বৃহস্পতিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সবার জন্য উন্মুক্ত এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয় হাজারো জনতা। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি ওয়ার্ল্ডেও সরাসরি সম্প্রচার করা হয় অনুষ্ঠানের।
গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশের কাছে উন্নয়নশীল দেশে উন্নরণের স্বীকৃতিপত্র তুলে দেয় জাতিসংঘ। আর এই অর্জন উদযাপনে সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, ইউএসএআইডির প্রধানরা এই স্বীকৃতিপত্রকে বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক উল্লেখ করে এই অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান। বিশ্বব্যাংক প্রধান বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের এক অনুপ্রেরণার নাম। বাংলাদেশকে দেখে সারা বিশ্বের শেখার আছে।
বিকালে রাজধানীর নয়টি স্থান থেকে সরকারের ৫৭টি মন্ত্রণালয়-বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ শোভাযাত্রা বের হয়। সবগুলো মিছিল গিয়ে যোগ হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।
সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি গ্যালারিতে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় অতিথি হিসেবে ছিলেন তার নাতি-নাতনিরাও।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আয়োজনের মূল পর্ব শুরু হয়।
সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার পর প্রধানমন্ত্রী আনন্দ-উদযাপন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের পথ পরিক্রমার ওপর করা তথ্যচিত্র। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু বর্তমান সরকারের সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন কর্মসূচি তুলে ধরা হয়।
পরে শুরু হয় বর্ণিল আলোর খেলা। আতশবাজিতে রঙিন হয়ে ওঠে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের আকাশ। তারপর চলতে থাকে নানা পরিবেশনা।
এরপর ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু শিল্পীদের সমবেত পরিবেশনা। আয়োজনের মধ্যে আরও ব্রান্ড সঙ্গীত, ছিল বাউল গান, নৃত্য এবং অ্যাক্রোবেটিক শো।
এর আগে রেকর্ড করা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার অংশগ্রহণেই উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ অর্জন আমারে ধরে রাখতে হবে, কোনো মতেই যেন এটা ব্যাহত না হয়, সেজন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার দেশে পরিণত হবে।’
কর্মদিবসে এই আনন্দ আয়োজনকে ঘিরে নগরবাসী চলাচলের ক্ষেত্রে অসুবিধারও সম্মুখীন হয়। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের আশেপাশে যান চলাচল রাত ১১টা অবধি নিয়ন্ত্রিত থাকবে, এটা আগেই ঘোষণা দেয়া ছিল। তারপরও নগরবাসী কর্মব্যস্ত মানুষ বিকালে বাড়ি ফিরদে দীর্ঘ যানজটে ভুগেছে।