টিভি আলোচক পিয়াস করিমের মরদেহ ‘শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য’ শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখার অনুমতি দেয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী বুধবার জানান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নামের একটি সংগঠন বৃহস্পতি ও শুক্রবার শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করার জন্য আগেই অনুমতি চেয়েছিল। কর্তৃপক্ষ তাদেরই অনুমতি দিয়েছে। পিয়াস করিমের পরিবারের করা আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, “আমাদের অনুমোদন না নিয়েই তারা লাশ শহীদ মিনারে আনার কথা মিডিয়ায় জানিয়েছেন। এখানে অনুমোদন দেওয়ারও কিছু নেই, দায়-দ্বায়িত্ব নেওয়ার কিছু নেই ।” তিনি বলেন, “যেহেতু আমাদের নিজস্ব ফোর্স নেই, তখন আমরা আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনীকে জানাব। তারা তাদের মতো ব্যবস্থা নেবে।” খবর: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
পিয়াসের ভাই লোটাস করিম অবশ্য জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে ‘নিরাপত্তা না পেলে’ তারা শহীদ মিনারে কফিন নেওয়ার পরিকল্পনা বাদ দেবেন। “আমরা চাই না কোনো রকম অবমাননা হোক।” তিনি বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা হলো- শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বের করে মরদেহ বাসায় নেওয়া হবে, শুভাকাঙ্খী ও আত্মীয়-স্বজনরা দেখবেন। এরপর বায়তুল মোকাররমে নিয়ে যাব, জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।”
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়াস করিম সোমবার মারা যান, যিনি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। গণজাগরণ আন্দোলন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়।
এ কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে পিয়াস করিমের লাশ বুধবার শহীদ মিনারে রাখার কথা বলা হলে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে; বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তা প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়।
পরে পিয়াসের প্রবাসী স্বজনদের দেশে ফিরতে বিলম্বের কারণে দাফন পিছিয়ে গেলে পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন করে আবেদন করা হয়। পিয়াসের স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমেনা মহসীন স্বাক্ষরিত ওই আবেদন মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয় বলে লোটাস করিম জানান।
পিয়াস করিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার দিনব্যাপী শোক দিবসের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেদিন সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের প্রতি ‘শেষ শ্রদ্ধা’ জানানোর বিষয়টিও রয়েছে।
এদিকে গণজাগরণ মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন ‘যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের’ব্যক্তি হিসেবে পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। তার কফিন শহীদ মিনারে নেওয়া ঠেকাতে সেখানে ‘পথচিত্র’ অঙ্কন করেন একদল চারুশিল্পী।