কলকাতায় ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ দপ্তরের কাছে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে, যেখানে বর্ধমানকাণ্ডে গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন জঙ্গিরা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের এক কর্মকর্তাকে কোট করে অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ জানায়, ‘সোমবার সন্ধ্যায় সল্ট লেকে স্থাপিত এনআইএ’র অস্থায়ী ওই দপ্তরের কাছে বিস্ফোরণ ঘটে।’
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এই বিস্ফোরণে সল্ট লেকের ৫ নম্বর সেক্টরের একটি যাত্রী ছাউনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওই এলাকার পাশের সিআরপিএফ (সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স) ক্যাম্পাসে এনআইএ অস্থায়ী দপ্তর বসিয়ে কাজ করছে। ওই এলাকাটি বেশ সুরক্ষিত।
সিআরপিএফ ফটকে কর্মরত এক পুলিশ সদস্য বলেছেন, চলন্ত একটি গাড়ি থেকে সেখানে কিছু ছুড়ে ফেলা হয়েছিল।
ঊর্ধ্বতন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিডিনিউজকে জানায়, “সম্ভবত বর্ধমান বিস্ফোরণের তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরকের আলামত সংগ্রহ করেছে। ঘটনাস্থলের পাশের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা চিত্রও খতিয়ে দেখছে তারা।
বিধান নগরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেবাশীষ ধর বলেন, “আমরা আলামত সংগ্রহ করেছি। এটা কী ধরনের বিস্ফোরণ ছিল, তা এখনই বলা কঠিন। তবে এটা ঠিক যে বিস্ফোরণের মাত্রা ছিল কম।”
গত ২ অক্টোবর বর্ধমানে বিস্ফোরণের পর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার মধ্যে থাকা সাজিদ ওরফে শেখ রহমতুল্লাহ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জেএমবির কমান্ডার বলে ভারতের গোয়েন্দাদের দাবি।
এদিকে বর্ধমান বিস্ফোরণে জড়িত আরেকজনকে গ্রেপ্তারের কথা সোমবার জানিয়েছে এনআইএ, যার মাথার দাম ১০ লাখ রুপি ঘোষণা করা হয়েছিল।
তার নাম আমজাদ শেখ কাজল (৩০)। তিনিও বাংলাদেশি নাগরিক এবং জেএমবির নেতা বলে জানিয়েছেন ভারতের গোয়েন্দারা।
আমজাদকে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বোমা তৈরিতে দক্ষ বলে এনআইএ দাবি করেছে।
এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “বর্ধমান বিস্ফোরণের পরপরই আমজাদের কলকাতার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছিল। সে পালিয়ে গেলেও তার বাড়িতে রাসায়নিক কেনার কিছু ভাউচার পাওয়া গিয়েছিল।”
ওই কর্মকর্তা বলেন, কলকাতা থেকে দিল্লিতে পালিয়ে গিয়েছিলেন আমজাদ। সেখান থেকে তিনি যান উত্তর প্রদেশে। সেখান থেকে বীরভূম ফেরার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বর্ধমানকাণ্ডে সন্দেহভাজন ১২ জনের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়, এর মধ্যে সাজিদের মাথার দামও ছিল ১০ লাখ রুপি।
এই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে বাংলাদেশের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে হত্যার একটি জঙ্গি পরিকল্পনার তথ্য পাওয়ার কথাও ভারতীয় গোয়েন্দারা ইতোমধ্যে জানিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার সাজিদকে সোমবার আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিল না বলে কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার জানায়। বিচারক তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনআইএ হেফাজতে পাঠিয়েছে।
আদালতে দেওয়া সাজিদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে সংবাদপত্রটি বলেছে, সাজিদ বাংলাদেশে অপরাধ করে বাঁচার জন্য ভারতে পালিয়েছিল। সূত্রঃ বিডিনিউজ